🍷 “নেশা হলেই রাঁধুনি অক্ষয়ের প্রত্যাবর্তন!” — মদ্যপানের পর বলিউড খিলাড়ির এক অদ্ভুত শখ

নেশা হলেই রাঁধুনি অক্ষয়ের প্রত্যাবর্তন!

বলিউডের ‘খিলাড়ি’ নামে খ্যাত অক্ষয় কুমার মানেই শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা এবং কঠোর ফিটনেস রুটিনের প্রতীক। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই উঠে পড়েন, যোগাভ্যাসে দিন শুরু করেন, নির্দিষ্ট সময়ে খান, কাজ করেন এবং ঘুমান। তাঁর এই সংযমই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। কিন্তু এমন মানুষও যখন মদ্যপানের কথা বলেন, তখন কৌতূহল তৈরি হয়— অক্ষয় কুমার মদ্যপান করলে আসলে কী করেন?

🥂 “নিয়মিত নয়, তবু কখনও-সখনও খাই”— স্বীকারোক্তি অক্ষয়ের

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিত মদ্যপান করেন না। তবে একেবারেই দূরে থাকেন, এমন নয়।

“কখনও যদি বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান থাকে, যেমন স্ত্রীর জন্মদিন বা আমার নিজের পার্টি, তখন সামান্য ওয়াইন খাই,” — বলেন অভিনেতা।

তবে তিনি লক্ষ্য করেছেন, যত কমই পান করুন না কেন, “আমার খুব তাড়াতাড়ি নেশা হয়ে যায়।”

অক্ষয়ের কথায়, “মজার বিষয় হল, নেশা হলে আমি আর পাঁচজনের মতো নাচি না, গানও গাই না, কাউকে রাগাও করি না। বরং আমি রান্না করতে শুরু করি!”

🍳 মদ্যপানের পর ‘রাঁধুনি’ হয়ে যান অক্ষয়

অক্ষয়ের এই মন্তব্যে হাসির রোল পড়ে ভক্তমহলে। কিন্তু এর পেছনে রয়েছে এক বাস্তব ও আবেগঘন গল্প।
বলিউডে প্রবেশের আগে তিনি ছিলেন এক সাধারণ যুবক, যিনি ব্যাঙ্ককের একটি হোটেলে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করতেন।
তাঁর জীবনের প্রথম উপার্জন আসে রান্না থেকে।

সেই পুরনো দিনগুলোর স্মৃতিই নাকি জেগে ওঠে মদ্যপানের পর। অক্ষয় মৃদু হাসিতে বলেন,

“নেশা হলেই আমার ভিতরের পুরনো অক্ষয় জেগে ওঠে। আমি তখন চুলা জ্বালাই, কিছু রান্না করি। মনে হয়, আমি আবার সেই ব্যাঙ্ককের ছোট্ট রান্নাঘরে ফিরে গেছি।”

তিনি আরও জানান, রান্না তাঁর কাছে শুধু শখ নয়, আত্মিক প্রশান্তির উৎস। হয়তো সেই কারণেই মদের প্রভাবে মন খুলে গেলে তাঁর হাত স্বতঃস্ফূর্তভাবে পৌঁছে যায় কড়াই-চামচে।

🧠 মনোবিজ্ঞানের বিশ্লেষণ: মদ ও স্মৃতির আবেগঘন সংযোগ

অক্ষয়ের এই অভ্যাসের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুম্বইয়ের মনোবিজ্ঞানী নেহা কদবম।
তাঁর মতে,

“মদ মস্তিষ্কের ‘লিম্বিক সিস্টেম’-এর উপর প্রভাব ফেলে, যা আবেগ ও স্মৃতির কেন্দ্র। তাই মদ্যপানের সময় অনেকের মধ্যেই পুরনো স্মৃতি বা অপ্রকাশিত অনুভূতি ফিরে আসে।”

তিনি আরও বলেন, “অক্ষয়ের ক্ষেত্রে রান্না তাঁর জীবনের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত। তাই নেশার মুহূর্তে মস্তিষ্ক অবচেতনে সেই সুখস্মৃতি জাগিয়ে তোলে। রান্না তাঁর কাছে একধরনের আত্মতৃপ্তি ও স্মৃতির পুনরাবিষ্কার।”

🍇 ‘সচেতন অক্ষয়’-এর বার্তা: সংযমই আসল শক্তি

যদিও এই গল্প শুনে মনে হতে পারে, অক্ষয় মদ্যপান উপভোগ করেন, বাস্তবে তিনি সংযমের পক্ষপাতী।
তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য,

“আমি বিশ্বাস করি, নিয়মিত মদ্যপান শরীর ও মন দুইয়েরই ক্ষতি করে। সংযম থাকলে তবেই জীবনের ভারসাম্য বজায় থাকে।”

তাঁর মতে, নিজের শরীর ও মনকে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখা একজন অভিনেতা এবং নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব।

🔚 শেষকথা: নেশায় নয়, স্মৃতিতে মাতোয়ারা অক্ষয়

অক্ষয় কুমারের এই স্বীকারোক্তি তাঁর চরিত্রেরই এক বিশেষ দিক তুলে ধরে— তিনি এমন এক মানুষ, যিনি নেশার মুহূর্তেও আত্মপরিচয়ের খোঁজে ফেরেন।
কারও জন্য নেশা ভুলিয়ে দেয় অতীত, কিন্তু অক্ষয়ের ক্ষেত্রে তা বরং জাগিয়ে তোলে তাঁর শুরুটা, তাঁর সংগ্রাম, তাঁর ‘অক্ষয়ত্ব’।