🔻 ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের জেরে তেলের দামে অস্থিরতা, বিশ্ববাজারে বাড়ছে আতঙ্ক

ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের জেরে তেলের দামে অস্থিরতা!

পশ্চিম এশিয়ায় ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা যত বাড়ছে, ততই কাঁপছে আন্তর্জাতিক তেল বাজার। যুদ্ধের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা যেমন সুরক্ষিত সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন, তেমনই তেলের দামেও ওঠানামা শুরু হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির এই সূচক পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপরেও— বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষেত্রে।

বিশ্ববাজারে একটি বড় প্রশ্ন এখন ঘোরাফেরা করছে— এই উত্তেজনা যদি প্রকৃত যুদ্ধের রূপ নেয়, তবে জ্বালানির দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

সংঘাতের ছায়ায় জ্বালানির বাজার

গত সপ্তাহে ইজরায়েলের ইরানে হামলার জেরে তেলের দামে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রায় ৪% লাফ দেখা যায়। যদিও পরে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফেরে, তবে বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা থেকে যায়। গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর মতে, সরাসরি যুদ্ধ না হলে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কিছুটা কম হতে পারে, তবে হরমুজ প্রণালির মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যদি কোনও বাধা তৈরি হয়, তখন তার প্রতিক্রিয়া মারাত্মক হতে পারে।

হরমুজ প্রণালির মাধ্যমেই বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ অপরিশোধিত তেল পরিবাহিত হয়। এই প্রণালি বিপর্যস্ত হলে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হবে, যার জেরে আবারও লাফিয়ে উঠবে দাম।

বাজারের প্রতিক্রিয়া

মূল্যবৃদ্ধির এই চাপ শুধু যে ব্যবসায়িক দিক থেকেই উদ্বেগের, তা নয়। এতে বাড়বে পরিবহন খরচ, প্রভাব পড়বে খাদ্যদ্রব্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপরেও। ইতিমধ্যেই ব্রেন্ট ক্রুডের দাম একাধিকবার ৮৫ ডলারের গণ্ডি পার করেছে। WTI (West Texas Intermediate)-এর ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে একই প্রবণতা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাত নিয়ন্ত্রণে না এলে বা কূটনৈতিক স্তরে শান্তির উদ্যোগ ব্যর্থ হলে বাজারে আরও বড় প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। জ্বালানির সরবরাহে বিঘ্ন মানেই বিশ্বের সমস্ত শিল্পক্ষেত্রেই প্রভাব পড়বে।

বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় খোঁজা

সংঘাতের সময়ে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত সোনার মতো নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝোঁকেন। বর্তমানে সোনার দামেও সেই ছাপ দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের চাহিদাও বেড়েছে, কারণ বহু দেশ যুদ্ধের জেরে মার্কিন ডলার-নির্ভর অর্থনীতিতে ঝুঁকছে।

তবে ফেডারেল রিজার্ভ এখনই সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তে আসবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির খবর খুব বেশি নেই।

ভারতের জন্য কী বার্তা?

ভারত বিশ্বে তেল আমদানিকারী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে, দেশের রাজস্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের ভর্তুকি নীতি, জ্বালানির শুল্ক— সব কিছুই চাপের মুখে পড়বে।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

বিশ্লেষকদের মতে, যতদিন না পরিস্থিতি স্থিতিশীল হচ্ছে, ততদিন তেলের বাজারে এই দোলাচল বজায় থাকবে। পশ্চিম এশিয়ার সংঘাত শুধু মানবিক বা রাজনৈতিক সমস্যা নয়, এটি অর্থনৈতিক ভাবেও বিশ্বকে গভীর ভাবে নাড়িয়ে দিচ্ছে।

ভারতে আসছে স্যামসাং Galaxy S25 সিরিজের One UI 8 বিটা ভার্সন! কী কী থাকছে এই আপডেটে?