🌑 ‘তারকা নাকি দায়হীন?’ ভিক্টোর কাণ্ডে লজ্জায় মুখ ঢাকছে টলিপাড়া, গ্রেফতার কি ফেরাবে হুঁশ?

ভিক্টোর কাণ্ডে লজ্জায় মুখ ঢাকছে!

একটা রাত, এক কাপ নেশা, আর এক মুহূর্তের গাফিলতি—তার ফল যেন সারা টলিপাড়ার কাঁধে এসে পড়ল। ঠাকুরপুকুরের ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার মূল অভিযুক্ত, টেলিভিশনের পরিচিত মুখ পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো, অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁর বেপরোয়া drunken driving-এ প্রাণ হারিয়েছেন একজন নিরীহ পথচারী, আহত আরও অনেকে। এবং এই ঘটনার অভিঘাতে কেঁপে উঠেছে গোটা ছোটপর্দা জগৎ।

রবিবার ভোররাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ছয় জনকে ধাক্কা দেন ভিক্টো। গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, তৃণা সাহা, সাহেব ভট্টাচার্য ও রূপা ভট্টাচার্য।

“প্রচণ্ড লজ্জিত, মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে”—রূপার ক্ষোভ

অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ভিক্টোর মতো একজন পরিচিত মুখের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে সত্যিই মাথা কাটা যাওয়ার মতো অবস্থা। সমাজমাধ্যমে আমরা তো তারকাদের নামে শুনতে পাচ্ছি—‘সবাই ক্ষমতাবান, ঠিক ছাড় পেয়ে যাবে!’ ভিক্টোর গ্রেফতার অন্তত আমাদের মুখ রক্ষা করল।”

ভাস্বরের প্রশ্ন: “নেশা করে গাড়ি চালানোই কি ‘নতুন নর্মাল’?”

অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই কাজটা স্পষ্ট অপরাধ। নেশা করে গাড়ি চালানো, তাতে প্রাণ হারানো—এসবের কোনও ক্ষমা নেই। এঁদের এত অর্থ, এত প্রতিপত্তি—চালক রাখার সামর্থ্য নেই?” তাঁর আফসোস, “একজন মানুষ বাজারে গিয়েছিলেন, আর ফেরেননি। তাঁর মৃত্যুর দায় কে নেবে? ইন্ডাস্ট্রি?”

তৃণা বলছেন, “পার্টি ঠিক আছে, কিন্তু দায়িত্ব?”

অভিনেত্রী তৃণা সাহা মনে করেন, রাত জেগে পার্টি করাই দোষ নয়। তবে তার পর গাড়ি চালাতে বসাটা চূড়ান্ত বোকামি। তাঁর কথায়, “আমরাও তো অনেক রাত কাজ করি বা পার্টি করি। কিন্তু চালক বা অ্যাপ ক্যাব ব্যবহার করি। এমন কিছু করি না যাতে অন্য কারও ক্ষতি হয়।”

সাহেবের আক্ষেপ, “এই শহরে যেন মদ খেয়েই গাড়ি চালানো গৌরব!”

সাহেব ভট্টাচার্য ২০১৭ সাল থেকেই ড্রিঙ্ক অ্যান্ড ড্রাইভ বিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, “এখন কলকাতায় অনেকে বলেন, ‘খেয়ে আমি ভালো গাড়ি চালাই!’ এর চেয়ে মূর্খতা আর কিছু হয় না। এক ভিক্টোর জন্য গোটা ইন্ডাস্ট্রিকে দায়ী করা ঠিক নয়, কিন্তু এটা সতর্ক হওয়ার সময়। আইন কাজ না করলে মানুষ থামবে না।”

“নারী হয়ে নারীর পতন দেখা যন্ত্রণা দেয়”—রূপার অতিরিক্ত সংযোজন

শুটিংয়ের মাঝেই রূপা জানিয়েছেন, ভাইরাল হওয়া ভিক্টোর পার্টি সঙ্গিনী শ্রিয়ার বেসামাল ভিডিও দেখে তিনি ব্যথিত। বললেন, “কারও ব্যক্তিগত জীবন থাকতেই পারে। কিন্তু মাত্রাজ্ঞান থাকা জরুরি, বিশেষ করে পরদিন কাজ থাকলে। পরিচালক যদি নিজেই বেহাল, বাকিদের সামলাবেন কী করে?”

তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়…

ভিক্টোর গ্রেফতারি কি সত্যিই টেলিপাড়ায় হুঁশ ফিরিয়ে আনবে? নাকি এটাও চায়ের কাপে ঝড় হয়ে মিলিয়ে যাবে?

রূপার মতে, “টেলিপাড়ায় মানসিক চাপ, কাজের অনিশ্চয়তা, লোভ আর ক্ষমতার মোহ যে হারে বাড়ছে, তাতে এই ঘটনা হয়তো চোখ খুলবে না। এর আগেও অনেক বার এমন হয়েছে। এবার কি কিছু বদলাবে?” প্রশ্নটা থেকে যায় আমাদের সবার কাছেই।

পুরুষের ত্বকে ক্যানসারের ঝুঁকি ৫০% বেশি! সানস্ক্রিন মাখছেন ঠিকঠাক?