মহুয়ার বিস্ফোরক আক্রমণ!
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ফের শিরোনামে। তবে এ বার তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য বিরোধীরা নয়, বরং নিজের দলেরই এক নেতা! নদিয়ার পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকায় গিয়ে বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের নাম না করে তাঁকে প্রকাশ্যে ‘চোর’, ‘ডাকাত’ বলে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা জেলার তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া।
🎤 “যার জন্য দল কালিমালিপ্ত, সে এলাকায় মিটিং করবে?”
বুধবার বার্নিয়া অঞ্চলের এক কর্মিসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে মহুয়ার আক্রমণের ঝড় যেন সব সীমা ছাড়িয়ে গেল। তিনি বলেন, “যার জন্য দল কলঙ্কিত, যার জন্য সরকারের পতন প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে, চার্জশিট জমা পড়েছে— সেই মানুষটাই ভোটের আগে এলাকায় ঢুকে সভা করবে? আমরা কি সব মেনে নেব?” নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমি কখনও কারও বিরুদ্ধে এমন ভাষা ব্যবহার করিনি। কিন্তু আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি। যারা দলকে কালিমালিপ্ত করেছে, তারা চোর, ডাকাত, রঘু ডাকাত!”
🏴☠️ “ওর বউ চোর, ছেলে চোর, গোটা পরিবার চোর!”
সেখানেই থামেননি মহুয়া। আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, “এরা শুধু ছিঁচকে চোর নয়, পকেটমারও নয়। ওর বউ চোর, ছেলে চোর, গোটা চোদ্দোগুষ্টি চোর!”
তাঁর এই বক্তব্য শুনে সভায় উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের মধ্যেও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, “আমি কি এখানে দাঁড়িয়ে মিথ্যা কথা বলছি? বাস্তবটাই বলছি। আমি তৃণমূলের সৈনিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। কয়েক জন চোর-ডাকাতের জন্য দলের সবাই কালিমালিপ্ত হচ্ছে। এটা আর বরদাস্ত করা যাবে না।”
🏛️ মানিকের প্রতিক্রিয়া: “এত দিন বিরোধীরা বলত, আজ দলেরই একজন বলছে”
এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রতিক্রিয়া দেন পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তিনি খানিকটা হতাশ গলায় বলেন, “এত দিন বিজেপি-সিপিএম আমাকে চোর বলছিল, আজ দলেরই একজন সেই একই কথা বলল!’’
তৃণমূলের জেলা সাংগঠনিক চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তিনি সংক্ষেপে বলেন, “যিনি বলেছেন, ব্যাখ্যা দেওয়ার দায় তাঁর।”
💥 মহুয়া বনাম মানিক: পুরনো দ্বন্দ্বের নতুন মোড়
এই ঘটনা মহুয়া বনাম মানিকের পুরনো সংঘাতকেই নতুন করে উসকে দিল। মনে রাখতে হবে, একসময় কৃষ্ণনগর লোকসভা এলাকার ছয় বিধায়ক মিলে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের অন্যতম ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য।
তাঁর বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে, এবং সেই মামলায় তিনি গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তাই মহুয়ার এই আক্রমণ যেন তাঁর সেই বিতর্কিত অধ্যায়কেই নতুন করে তুলে ধরল।
🎭 তৃণমূলের অন্দরমহলে টানাপোড়েন!
মহুয়ার বক্তব্য দলের অন্দরে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। একদিকে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজের কঠোর অবস্থান জানাচ্ছেন, অন্যদিকে তাঁর এই ভাষা ব্যবহার নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে।
এই বিস্ফোরক আক্রমণ কি দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধকে আরও তীব্র করবে? নাকি মহুয়ার এই ‘ক্লিন ইমেজ’ বজায় রাখার চেষ্টা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সমর্থন পাবে? আপাতত নদিয়ার রাজনীতি উত্তপ্ত, আর তৃণমূলের অন্দরমহলেও চাপা টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেছে।
আগামী দিনে এই রাজনৈতিক নাটকের নতুন মোড় দেখার অপেক্ষায় রাজ্য রাজনীতি!
গঙ্গায় ট্রলি ব্যাগে লাশ ফেলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা মা-মেয়ে! কী বলল জেরায়?