🏃‍♂️৬০-এও টগবগে মিলিন্দ! কেন এখনও খালি পায়ে দৌড়োন এই ‘আয়রনম্যান’? জানুন তাঁর ১৫ বছরের পুরনো সিদ্ধান্তের গল্প

৬০-এও টগবগে মিলিন্দ!

বলুন তো, ৬০ বছর বয়সে কতজনকে খালি পায়ে ম্যারাথন দৌড়তে দেখেছেন? উত্তর প্রায় শূন্য। কিন্তু ব্যতিক্রম মিলিন্দ সোমন! বয়স শুধুই সংখ্যা—এই কথার জীবন্ত উদাহরণ যেন তিনি। শুটিং, ভ্রমণ, ইভেন্ট—সব ব্যস্ততার মাঝেও ফিটনেস নিয়ে একটুও আপস করেন না ভারতের এই সুপারমডেল। নিয়ম করে দৌড়োন, আর তা-ও খালি পায়ে!

কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন খালি পায়ে দৌড়োন মিলিন্দ? কেনই বা এই অনন্য ফিটনেস পদ্ধতি তাঁকে এতটা টানে?

⭐ খালি পায়ে দৌড়োনোর যাত্রা: লোনাভলার সেই দিন!

এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে মিলিন্দ ফিরে গেলেন ১৫ বছর আগের এক দিনে। লোনাভলার ঢালু রাস্তায় প্রায় ২০ কিমি দৌড়োনোর পর হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। জুতো খুলে একটু বিশ্রাম নিতেই মিলল আশ্চর্য স্বস্তি। তারপর জুতো না পরে আবার দৌড়াতে শুরু করেন।
আর সেখানেই ঘটে ম্যাজিক!

মিলিন্দের ভাষায়—
“জুতো ছাড়া দৌড়োনোর পর দেখলাম, আমি অনেক দূর পর্যন্ত অনায়াসে ছুটতে পারছি।”

এই ছোট পরিবর্তন তাঁর দৌড়োনোর কৌশল থেকে শুরু করে পুরো শারীরিক ভঙ্গিতে আনল বড় বদল। শরীরের ভারসাম্য ঠিক হল, স্পর্শসংবেদনশীলতা বাড়ল, আর দৌড়োনোর রিদমও হলো নিখুঁত।

অবশ্য খুব গরম, বরফ বা চরম ঠান্ডায় তিনি জুতো পরেন। নিরাপত্তাই প্রথম!

👣 খালি পায়ে দৌড়োনোর উপকারিতা

বিভিন্ন গবেষণাও মিলিন্দের অভিজ্ঞতাকে সমর্থন করে:

✔ হাঁটুতে চাপ কমে

জুতো পরে দৌড়োনোর তুলনায় হাঁটুজোড় কম স্ট্রেস নেয়।

✔ পায়ের পেশি আরও শক্তিশালী হয়

খালি পায়ে দৌড়োলে গ্রিপ বাড়ে, পায়ের পেশি প্রাকৃতিকভাবে শক্ত হয়।

✔ ভঙ্গি ও ব্যালান্স ভালো হয়

জুতোর সাপোর্ট না থাকায় শরীর নিজে থেকেই সঠিক ভঙ্গি ধরে রাখতে শেখে।

✔ শরীর-মনের সংযোগ বাড়ে

পায়ের নিচে মাটি স্পর্শ করার অনুভূতি সেন্সরি সিস্টেমকে তীক্ষ্ণ করে।

⚠️ তবে খালি পায়ে দৌড় আর সবার জন্য নয়!

চিকিৎসকরা কিছু সতর্কতার কথাও বলেন—

গোড়ালিতে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে।
কাফ মাসল ও পায়ের টেন্ডনে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।
যাঁদের ফ্ল্যাটফুট আছে, তাঁদের জন্য একেবারেই নয়।
ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির রোগীরা খালি পায়ে দৌড়োনো ভুলেও চেষ্টা করবেন না।

তাই সরাসরি খালি পায়ে দৌড় শুরু করবেন না। আগে হাঁটা → হালকা জগিং → তারপর দৌড়—ধীরে ধীরে ট্রানজিশন জরুরি।

🏁 শেষ কথা

মিলিন্দ সোমন আমাদের শিখিয়েছেন—ফিটনেস মানে শুধু জিম বা ডায়েট নয়, বরং দেহের সঙ্গে এক সুরে চলা। খালি পায়ে দৌড়োনোর সিদ্ধান্ত তাঁর ফিটনেস লাইফে যেমন বদল এনেছে, তেমনই অনুপ্রাণিত করেছে অসংখ্য মানুষকে।

আপনিও যদি এই পদ্ধতি চেষ্টা করতে চান, তাহলে শুরু করুন ছোট থেকে, আর অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে।