রবিতে ফের ‘দিল্লি চলো’
পঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষক সংগঠনগুলি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দাবির ভিত্তিতে ফের দিল্লি অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না বাড়ানোর মতো বিষয়গুলি। কৃষক নেতারা ঘোষণা করেছেন, রবিবার থেকে তারা ফের দিল্লি চলো মিছিল শুরু করবেন। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার হরিয়ানার শম্ভু সীমানায় কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযান আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে কমপক্ষে ছয় জন কৃষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে কৃষক নেতারা পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, এই বাধা সাময়িক ছিল এবং তারা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। শনিবার কৃষক নেতা সরওয়ান সিংহ পান্ধ ঘোষণা করেন, রবিবার থেকে তারা আবার দিল্লি চলো অভিযান শুরু করবেন।
সরওয়ান সিংহ পান্ধ বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনার আহ্বান জানায়নি। নরেন্দ্র মোদী সরকার কোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত নয়।” এর পরই তিনি নিশ্চিত করেন, ১০১ জন কৃষক শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লির উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করবেন। এই পদযাত্রায় কিসান মজদুর মোর্চা এবং সংযুক্ত কিসান মোর্চা অংশগ্রহণ করবে।
কৃষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশন এবং বিদ্যুৎ বিলের বৃদ্ধি না করার দাবি। এর আগে ১৩ ও ২১ নভেম্বরেও কৃষকরা দিল্লি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তবে তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি এবং পুলিশ তাঁদের শম্ভু সীমানায় আটকে দেয়।
শুক্রবার যখন কৃষকরা দিল্লির দিকে যাত্রা শুরু করেছিলেন, তখন পুলিশ তাঁদের শম্ভু সীমানায় ব্যারিকেড দিয়ে আটকায়। এই অবস্থায় কৃষকদের আর দিল্লি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অশান্তির আশঙ্কা থাকায় হরিয়ানার অম্বালায় ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে, যার ফলে একসাথে পাঁচ জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শম্ভু সীমানায় গত কয়েক দিনে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ এবং প্রশাসন তাঁদের যে কোনও ধরনের মিছিল বা আন্দোলন রুখতে তৎপর রয়েছে। একদিকে যেমন কৃষকরা তাদের দাবির প্রতি দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন, অন্যদিকে পুলিশও পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কৃষকদের এই আন্দোলন নিয়ে পরবর্তী দিনগুলিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, গত সপ্তাহে কৃষকদের আন্দোলন সামাল দিতে অম্বালায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছিল। কৃষকরা মনে করেন, তাঁদের দাবি পূরণের জন্য সরকারের কাছে কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, এবং তাই তারা আবার দিল্লি যাওয়ার পথে রওনা দেবেন।
রবিবারের দিল্লি চলো অভিযানকে কেন্দ্র করে শম্ভু সীমানায় উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। এর আগে ১৩ ও ২১ নভেম্বরেও পুলিশ কৃষকদের আটকে দিয়েছিল, এবং রবিবারের প্রচেষ্টা তাঁদের চতুর্থ বার দিল্লি যাত্রার চেষ্টা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। কৃষকদের এই উদ্যোগ আরও একবার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাঁদের দাবির সমাধান নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।

