Thursday, February 13, 2025

তিব্বতে ভয়াবহ ভূমিকম্প! রিখটার স্কেলে তীব্রতা ৭.১, নেপাল, শিলিগুড়ি ও সিকিম-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কম্পন

Share

তিব্বতে ভয়াবহ ভূমিকম্প!

মঙ্গলবার সকালে তিব্বতে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বিস্তীর্ণ এলাকা। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.১। কম্পন অনুভূত হয়েছে নেপাল, শিলিগুড়ি, সিকিম এবং বিহারের উত্তরাঞ্চল-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। রাজধানী দিল্লি এবং ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী অঞ্চলও এই কম্পনের আওতায় এসেছে।

একাধিক কম্পন, বাড়ছে আতঙ্ক

প্রথম কম্পনটি হয় সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৭.১। এটি ছিল ভূমিকম্পের মূল কম্পন, যার উৎসস্থল ছিল তিব্বতের শিজ়াং অঞ্চলে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল।

এর কিছু সময়ের মধ্যেই আফটারশকের একাধিক ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় কম্পনটি অনুভূত হয় সকাল ৭টা ২ মিনিটে, যার তীব্রতা ছিল ৪.৭। এর ঠিক পাঁচ মিনিট পর, সকাল ৭টা ৭ মিনিটে তৃতীয় কম্পনটি হয়। এর তীব্রতা ছিল ৪.৯ এবং কেন্দ্র ছিল ৩০ কিলোমিটার গভীরে। সকাল ৭টা ১৩ মিনিটে আরও একটি আফটারশক হয়, যার তীব্রতা ছিল ৫।

এই একাধিক কম্পনে অঞ্চলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত বড় ভূমিকম্পের পরে পরবর্তী কিছু সময় ধরে আফটারশক দেখা যায়, যা মঙ্গলবার সকালের ঘটনা আরও গুরুতর করে তুলেছে।

ভূমিকম্প

নেপাল এবং ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কম্পনের প্রভাব

তিব্বত-নেপাল সীমান্তে হওয়া এই ভূমিকম্পের জেরে নেপাল, ভুটান এবং ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কম্পনের শিকার হয়েছে। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, সিকিম এবং বিহারের পটনা-সহ বেশ কিছু অঞ্চলে কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে। বিহারের উত্তরাঞ্চল, যা নেপাল সীমান্তের কাছাকাছি, সেখানে কম্পন বিশেষভাবে অনুভূত হয়েছে।

এছাড়াও, দিল্লি এবং ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের কম্পন অনুভূত হয়। চিনের কিছু অংশেও কম্পনের প্রভাব পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

ক্ষয়ক্ষতি এবং সতর্কতা

ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, বড় ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা থেকেই যায়। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানি বা বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ভূমিকম্প-পরবর্তী আফটারশকের কারণে আরও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে পারে।

নেপাল এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ভূমিকম্পের পরপরই বিভিন্ন জায়গায় মানুষ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে এবং জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।

ভূমিকম্পের সাধারণ বৈশিষ্ট্য

ভূমিকম্প সাধারণত টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে হয়ে থাকে। মঙ্গলবারের এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল তিব্বতের শিজ়াং, যা টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। বড় ভূমিকম্পের পরে আফটারশক হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। এটি মূল ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পন যা কয়েকদিন, এমনকি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত অনুভূত হতে পারে।

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের প্রভাব

তিব্বত ও নেপালের মতো অঞ্চলে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা হলেও, মঙ্গলবারের কম্পনটি ছিল ভয়াবহ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ধরনের ভূমিকম্প আরও বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ইঙ্গিত হতে পারে। এর ফলে স্থানীয় অবকাঠামোর উপর চাপ পড়তে পারে এবং ভবিষ্যতে বড় ক্ষতির ঝুঁকি থেকে যায়।

শেষ কথা

বর্তমানে কোনও বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর না মিললেও, মঙ্গলবার সকালের এই ভূমিকম্প উত্তর-পূর্ব ভারতের পাশাপাশি নেপাল এবং তিব্বতের মানুষকে এক গভীর আতঙ্কে ফেলে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকার এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

‘প্রিয় বোনেরা’… কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ঋণের ফাঁদ! পুলিশের দ্বারস্থ সুকান্ত মজুমদার

Read more

Local News