সাইবার অপরাধ সচেতনতা
প্রযুক্তির যুগে সাইবার অপরাধ দিন দিন বাড়ছে এবং এর ফলে বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের সাইবার সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। এ সমস্যা থেকে তাদের সুরক্ষিত রাখতে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নতুন এক উদ্যোগ নিয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সেলেন্সের অধীনে শুরু হচ্ছে ‘সাইবারের সহজ পাঠ’ নামক একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির। এই প্রশিক্ষণটির উদ্দেশ্য হল, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রদের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ সম্পর্কিত সচেতনতা প্রদান করা।
সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার অব এক্সেলেন্সের কোঅর্ডিনেটর সম্রাট ঘোষ জানিয়েছেন, ১৯ মে থেকে শুরু হওয়া এই প্রশিক্ষণ অনলাইনে হবে এবং এটি পাঁচদিন ব্যাপী, প্রতিদিন দু’ঘণ্টা করে চলবে। সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার-পোষিত সব স্কুলে এই প্রশিক্ষণের বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হচ্ছে। ছাত্ররা সহজেই অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন, এবং এই প্রশিক্ষণের লিঙ্ক ও কিউআর কোড স্কুলে পাঠানো হয়েছে।
প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হল সাইবার অপরাধ এবং সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে ছাত্রদের বিস্তারিত জানানো। সাইবার অপরাধের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে যখন সমাজমাধ্যম এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানা ধরনের ঝুঁকি বাড়ছে। অনেক ছাত্রেরই মোবাইল ফোন রয়েছে, এবং তারা বিভিন্ন সাইবার প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকে। কিন্তু অনেকেই জানেন না কীভাবে সাইবার অপরাধ থেকে নিরাপদ থাকা যায়। এই প্রশিক্ষণ তাদের সেই সচেতনতা প্রদান করবে, যাতে তারা ভুল তথ্য বা অপরাধের ফাঁদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে।
এই উদ্যোগটি স্কুলগুলোর পক্ষ থেকে সমর্থিত হয়েছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “আমাদের স্কুলে এই ধরনের প্রশিক্ষণ আগে হয়েছে, তবে এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। ছাত্ররা সাইবার অপরাধের শিকার হতে পারে, কারণ তারা অনেক সময়েই ইন্টারনেট বা সমাজমাধ্যম ব্যবহার করে কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত কিছু নিয়ম জানে না। এই ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়মিত হলে ভবিষ্যতে ছাত্ররা আরও সুরক্ষিত থাকবে।”
এছাড়া, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি মনে করে, “প্রযুক্তির যুগে সাইবার নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীরই এটি সম্পর্কে জানার প্রয়োজন।”
এই প্রশিক্ষণে পড়ুয়াদের সাইবার অপরাধের ধরন এবং সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে। যেমন— ইমেল বা সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে আসা ফিশিং লিঙ্ক, সিম ক্লোনিং, এবং সমাজমাধ্যমে অপরাধ ছড়ানোর মতো বিষয়গুলি কিভাবে ঘটতে পারে, সেই সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হবে। এছাড়া, কীভাবে এই ধরনের অপরাধ থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে, সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এই প্রশিক্ষণটি সাইবার অপরাধ থেকে নিরাপদ থাকতে ছাত্রদের প্রাথমিক প্রস্তুতি দেবে এবং তাদের সাইবার জগতে সচেতন, সুরক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে মিথ্যাচারের তৎপরতা: ভুয়ো খবরকে হাতিয়ার করছে পাকিস্তান