শ্রবণশক্তি রক্ষায় পাতে রাখুন সঠিক খাবার!
আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, শব্দদূষণ, বয়সের প্রভাব কিংবা সারাদিন ইয়ারফোনে গান শোনার অভ্যাস—সব মিলিয়ে কান ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি এখন সাধারণ ঘটনা। অথচ চোখ কিংবা দাঁতের মতো কানও সমান যত্ন দাবি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় কিছু নির্দিষ্ট খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে কানকে সুস্থ রাখা সম্ভব, এমনকি বয়সজনিত শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকিও অনেকাংশে কমানো যায়। সুস্থ শ্রবণশক্তির চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে পুষ্টিকর খাদ্যের মধ্যেই।
মাছ ও ডিম: ওমেগা-৩ এর জাদু
মাছ ও ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি১২ কানের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এগুলো শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং কানের স্নায়ু ও কোষের কার্যকারিতা ঠিক রাখে। নিয়মিত এই খাবার খেলে বয়সজনিত শ্রবণশক্তি হ্রাসের সম্ভাবনা অনেকটা কমে।
শাকপাতা: প্রাকৃতিক সুরক্ষা
পালং শাকসহ বিভিন্ন সবুজ শাকপাতা ফোলেট এবং ভিটামিন বি১২-এ সমৃদ্ধ। এই উপাদানগুলো কোষের সুস্থতা বজায় রাখে এবং কানকে বাইরের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। শব্দদূষণ বা বয়সজনিত কারণে যে ক্ষতি হয়, তা অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে এই শাকসবজি।
ফল: পটাশিয়ামের ভাণ্ডার
কলা, কমলালেবু এবং অন্যান্য পটাশিয়ামসমৃদ্ধ ফল কানের ভেতরের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। শ্রবণশক্তি ঠিক রাখতে এই তরলের সঠিক মাত্রা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই ফলগুলো যুক্ত করা উপকারী।
বাদাম ও বীজ: প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
কুমড়োর বীজ, আখরোট, কাজু এবং কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম। এটি শব্দদূষণজনিত শ্রবণহানি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস শুধু কানের যত্নই নেয় না, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
স্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তা
কানের সমস্যা নিয়ে সাধারণত আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই তখনই, যখন সমস্যা মারাত্মক আকার নেয়। অথচ কানও শরীরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যার যত্ন আগে থেকেই নেওয়া জরুরি। সঠিক খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শব্দদূষণ এড়ানো, ইয়ারফোন ব্যবহার কমানো এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোও প্রয়োজন।
পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা শুরু হয় হজমপ্রণালী থেকে। তাই পেট ভালো থাকলে শুধু কান নয়, শরীরের প্রতিটি অঙ্গই সুস্থ থাকবে। খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন এনে এবং সচেতনতা বাড়িয়ে সুস্থ শ্রবণশক্তি ধরে রাখা সম্ভব।
প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে নিজের জন্য এই যত্ন নেওয়াটা হয়তো চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে, কিন্তু নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণই হতে পারে দীর্ঘদিন ভালো শোনার গোপন রহস্য।

