রক্তাল্পতা দূর করতে কোন খাবার কতটা উপকারী?
অনেকেই জানেন যে, কিছু নির্দিষ্ট খাবার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে সেগুলো কীভাবে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়, তা জানা অত্যন্ত জরুরি। রক্তাল্পতা বা হিমোগ্লোবিনের অভাব হলে শরীর দুর্বল হতে থাকে, ক্লান্তি ভর করে, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা বা ত্বকের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে যায়। বিশেষ করে, মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতার সমস্যা অনেক বেশি দেখা যায়। এর প্রধান কারণ হলো লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ কমে যাওয়া, যা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করে।
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য সঠিক খাবার নির্বাচন করাই যথেষ্ট নয়, সেগুলো সঠিক পদ্ধতিতে খাওয়াটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদদের মতে, পালং শাক, ব্রোকোলি, বিট, পনির, ডিম, আপেল, তরমুজ, বেদানা, কুমড়োর বীজ, আমন্ড, অ্যাপ্রিকট ও কিশমিশের মতো খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা দরকার। তবে কীভাবে সেগুলো খাবেন, তার উপরেও নির্ভর করে শরীর কতটা পুষ্টি গ্রহণ করতে পারবে।
বিটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বেশি ঝাল-মশলা দিয়ে রান্না করে বা পকোড়া বানিয়ে খেলে তেমন কোনো উপকার পাওয়া যায় না। বরং বিটের জুস করে পান করলে বা স্যালাড হিসেবে খেলে শরীর সহজেই পুষ্টিগুণ গ্রহণ করতে পারে।
আপেলেও প্রচুর আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। রক্তাল্পতার সমস্যা থাকলে আপেলের রস করে পান করা ভালো। অথবা আপেলের সঙ্গে পিনাট বাটার মিশিয়ে খেলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যায়, কারণ এতে প্রোটিন ও ফ্যাট যুক্ত হয়, যা শরীরকে শক্তিশালী করে।
খেজুর আয়রনের অন্যতম ভালো উৎস। তবে অনেকেই এটি চাটনি বা মিষ্টান্ন বানিয়ে খান, যা খুব একটা কার্যকর নয়। খেজুর কাঁচা অবস্থায় খাওয়া বা ঈষদুষ্ণ দুধের সঙ্গে খেলে শরীর সহজেই পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে এবং রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
সূর্যমুখী ও কুমড়োর বীজেও উচ্চমাত্রায় আয়রন থাকে। তবে এই বীজগুলি যদি সরাসরি খেতে না চান, তাহলে রোস্ট করে বা স্মুদি বানিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীর সহজেই আয়রন শোষণ করতে পারে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক হয়।
বেদানা শুধু খেলে বা জুস বানিয়েও খাওয়া যায়। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, এটি দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া বেশি উপকারী। কারণ দই একটি প্রোবায়োটিক, যা শরীরের পরিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পুষ্টিগুণ ভালোভাবে শোষিত হয়।
তেমনি, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন পাতিলেবুর রস, আমলকি, কমলা ইত্যাদি আয়রন শোষণে সাহায্য করে। পালং শাক বা অন্য শাকসবজি যদি স্মুদি বানিয়ে তার সঙ্গে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে শরীর সহজেই আয়রন গ্রহণ করতে পারে এবং রক্তাল্পতার সমস্যা কমতে পারে।
সুতরাং, শুধু আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যথেষ্ট নয়, সেগুলো কোন পদ্ধতিতে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে, তা জানা আরও গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তাল্পতা দূর করা সম্ভব এবং শরীর থাকবে সুস্থ ও শক্তিশালী।
মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?