Thursday, January 30, 2025

শীতে অসুখবিসুখের প্রকোপ: কীভাবে সুরক্ষা পাবেন?

Share

শীতে অসুখবিসুখের প্রকোপ

শীতের সময়টা একটু ঠাণ্ডা, আরামদায়ক মনে হলেও, এই সময় অসুখবিসুখের প্রকোপ বাড়ে। সামান্য হাঁটাচলাতেই শ্বাসকষ্ট, কাশি না সারার সমস্যা, পেটের গোলমাল—এমন নানা সমস্যা এখন শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ছে। বিশেষ করে শীতের শহরগুলিতে এই ধরনের অসুখের হার বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে, এর পেছনে আসল কারণ কী? কেন এই শীতের সময়ে এসব অসুখ বেশি হচ্ছে? এবং এই সমস্যাগুলো কাদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে?

কলকাতার এক হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ চন্দ্রিমা পাল জানিয়েছেন, শীতে সাধারণত সংক্রমণজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। প্রতি বছর এই সময়টাতে সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, অনেকেই সর্দি বা কাশি একবার ধরলে তা সারতে চায় না, এবং পাশাপাশি নানা রকম অ্যালার্জির লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। এই সমস্যাগুলো শুধু বড়দের নয়, ছোটদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে।

শীতের সময় শ্বাসকষ্ট ও ভাইরাল ইনফেকশনের সমস্যা বেড়ে যায়, কারণ শীতকালে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস সহজে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষ করে রাইনোভাইরাস, যা নাক, মুখ, চোখ দিয়ে মানুষের শরীরে ঢুকে শ্বাসতন্ত্রে বাসা বাঁধে, শীতকালে তা বেশি সক্রিয় হয়। এর ফলে হাঁচি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যারা কম বয়সী, তারা সর্দিকাশি বা ভাইরাল ডায়েরিয়ার শিকার হয়ে থাকছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শীতে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শীতে মস্তিষ্কে ও হার্টে রক্তচলাচলকারী নালিগুলোর সঙ্কোচন বেশি হয়, যার ফলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। বড়দের মধ্যে রক্তচাপও বাড়ে, যা অন্য সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।

এছাড়াও, দূষণের মাত্রা বাড়ায় শীতকালে হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে। বাতাসে ভাসমান দূষিত কণাগুলি শ্বাসনালী দিয়ে ঢুকে শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যার ফলে শ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে যারা হাঁপানিতে ভুগছেন, তাদের জন্য এটি এক দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে পারে।

শীতকালীন ভাইরাল ডায়রিয়া একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যাচ্ছে, কারণ ভাইরাস যেমন রোটা ভাইরাস, মুখগহ্বরের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এবং জল, বাসি খাবার, কাঁচা স্যালাডের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এই ধরনের ডায়রিয়া শরীরে জলশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে, যা মারাত্মক হতে পারে।

তবে, এসব অসুখ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার উপায়ও রয়েছে। প্রথমত, সঠিক বিশ্রাম এবং প্রচুর তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে জল বেশি খাওয়ার প্রয়োজন। দূষিত বাতাসে বেরোনোর সময় মাস্ক পরা এবং ইনহেলার সঙ্গে রাখা জরুরি। যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তারা নির্দিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করবেন। পেটের সমস্যা হলে, অ্যান্টিবায়োটিকের পরিবর্তে ওআরএস বা পর্যাপ্ত জল পান করা উচিত।

শীতের অসুখবিসুখের থেকে বাঁচতে হলে, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনের অভ্যাস বজায় রাখতে হবে।

বিয়ের মরসুমে সোনা ৮১ হাজার পেরোল! গয়না না কিনে কীভাবে বিনিয়োগে লাভ বাড়ানো যায়?

Read more

Local News