Monday, December 1, 2025

চিয়া ডিম: নিরামিষ ডিমের রহস্য এবং এর পুষ্টিগুণ

Share

চিয়া ডিম

আমরা সাধারণত ডিম বলতে মুরগি, হাঁস, কিংবা কোয়েলের ডিম বুঝি। এই ডিমগুলি সাদা বা হালকা বাদামি রঙের হয় এবং প্রোটিনসহ বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে, আপনি কি কখনও চিয়া ডিমের কথা শুনেছেন? এটি একটি নিরামিষ ডিম, যা ভিগান বা নিরামিষাশীদের মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চিয়া ডিম কীভাবে তৈরি হয়, এর পুষ্টিগুণ কী এবং কেন এটি স্বাস্থ্য সচেতনদের পছন্দ, তা জানতে চলুন গভীরে আলোচনা করি।

চিয়া ডিম কী?

চিয়া ডিম মূলত চিয়া বীজ থেকে তৈরি। চিয়া বীজ কয়েক ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখলে এটি ফুলে উঠে একটি জেলির মতো পদার্থ তৈরি করে। এই জেলের গঠন ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে। এটি দেখতে কাঁচা ডিমের সাদা অংশের মতো হালকা হরহরে। ডিমের কুসুম বা অন্যান্য অংশ এখানে থাকে না।

পুষ্টিবিদ সামরিন সানিয়া জানিয়েছেন, যাঁরা ডিম খান না বা যাঁদের ডিমে অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের জন্য চিয়া ডিম একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। এটি প্রোটিন, ফাইবার, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

চিয়া ডিম

চিয়া ডিমের পুষ্টিগুণ

আমেরিকার কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম চিয়া বীজে পাওয়া যায়:

  • প্রোটিন: ১৭ গ্রাম
  • ক্যালশিয়াম: ৫৯৫ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেশিয়াম: ৩২৬ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস: ৬৯১ মিলিগ্রাম

অন্যদিকে, ১০০ গ্রাম সাধারণ ডিমে থাকে ১০.৭ গ্রাম প্রোটিন। এই তুলনায় চিয়া ডিম প্রোটিনে বেশি সমৃদ্ধ।

কেন চিয়া ডিম জনপ্রিয় হচ্ছে?

১. ফাইবারে ভরপুর:
চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়ক এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

২. ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড:
চিয়া বীজে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

৩. উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস:
চিয়া বীজ প্রাণিজ প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। নিরামিষাশী বা ভিগান ব্যক্তিদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চিয়া ডিম কাদের জন্য উপযুক্ত?

যাঁরা প্রাণিজ ডিম, মাংস, মাছ খান না, অর্থাৎ নিরামিষাশী, তাঁরা চিয়া ডিম সহজেই খেতে পারেন। এমনকি, ভিগানদের জন্যও এটি আদর্শ। ভিগানরা সাধারণত প্রাণিজ খাবার একেবারেই খান না। তাঁদের খাদ্যতালিকায় দুধ বা দুধজাত খাবারও থাকে না।

কেক, প্যানকেক, বা অন্যান্য বেকড খাবার তৈরিতে ডিমের বদলে চিয়া ডিম ব্যবহার করা যায়। এটি ভিগানদের মধ্যে একটি প্রচলিত বিকল্প হয়ে উঠেছে।

কীভাবে চিয়া ডিম বানাবেন?

চিয়া ডিম তৈরির পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ:

  • উপকরণ:
    • ১.৫ কাপ জল
    • ০.৫ কাপ চিয়া বীজ
  • পদ্ধতি:
    ১. একটি পাত্রে চিয়া বীজ এবং জল মিশিয়ে রাখুন।
    ২. ৭-৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর এটি ফুলে উঠে জেলের মতো আকার ধারণ করবে।
    ৩. একটি চামচ দিয়ে নেড়ে মিশ্রণটি তৈরি করে নিন। এটি চিয়া ডিম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

চিয়া ডিম স্মুদি, প্যানকেক, কেক, বা অন্যান্য রেসিপিতে সহজেই ব্যবহার করা যায়।

চিয়া ডিমের চাহিদা

আজকের দিনে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা বিভিন্ন খাবারে নতুন বিকল্প খুঁজছেন, যা পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য। চিয়া ডিম সেই চাহিদা পূরণ করছে। এটি কেবল পুষ্টিকর নয়, বরং পরিবেশবান্ধবও। ডিমের তুলনায় এটি তৈরি করতে কম সম্পদ প্রয়োজন হয় এবং এটি প্রাণিজ উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা কমায়।

অতএব, চিয়া ডিম শুধু ভিগানদের জন্য নয়, যাঁরা স্বাস্থ্যকর এবং পরিবেশবান্ধব খাবার খুঁজছেন, তাঁদের জন্যও এটি একটি দারুণ বিকল্প।

প্রথম বলেই আউট বিতর্ক: বিরাট কোহলির নট আউট সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তেজনা, রোহিতের প্রতিক্রিয়া

Read more

Local News