সন্দীপ ঘোষের লাইসেন্স বাতিলের
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলার জেরে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি। আর্থিক কেলেঙ্কারি থেকে ধর্ষণ এবং খুনের মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনাগুলি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল হওয়া।
সন্দীপ ঘোষ দাবি করছেন, তাঁর ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার প্রক্রিয়া নিয়ম মেনে হয়নি এবং তিনি নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগও পাননি। সেই কারণেই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং দ্রুত শুনানির আবেদন জানান। তবে আদালত সেই আবেদন নাকচ করেছে। বিচারপতি পার্থ সারথী সেনের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, এই মুহূর্তে মামলায় দ্রুত শুনানির কোনও প্রয়োজন নেই।

আদালতে ধাক্কা, দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ
সন্দীপ ঘোষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিলের আগে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। আইনের এই নিয়ম অবমাননার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন সন্দীপ ঘোষ। তাঁরা দাবি করেন, রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্তে অনিয়ম হয়েছে এবং সেই কারণে জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানি প্রয়োজন। কিন্তু বিচারপতি পার্থ সারথী সেন স্পষ্টভাবে জানান, বর্তমানে এই মামলায় দ্রুত শুনানির কোনও বিশেষ কারণ নেই। তবে পুজোর ছুটির পরে শুনানির সম্ভাবনা থাকলেও তা এখনই জরুরি নয়।
রেজিস্ট্রেশন বাতিল এবং সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তার অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং ধর্ষণ-খুনের মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। সেই ঘটনার পরই তার ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দীপের পক্ষ থেকে প্রশ্ন উঠেছে, নিয়ম মেনেই কি এই রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে? এই বিতর্ক নিয়েই তিনি আদালতে মামলা করেন।
যদিও সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মামলাগুলি এখনও বিচারাধীন, তবে তার ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল হওয়ায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাঁর ভবিষ্যৎ এখন গভীর সংকটে। এদিকে, সন্দীপের অনুগামীরা এই সিদ্ধান্তকে প্রতিহিংসামূলক বলে দাবি করছেন, এবং আদালতের কাছে সঠিক বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা রাখছেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
বিচারপতি পার্থ সারথী সেনের বক্তব্য স্পষ্ট, এখনই এই মামলায় জরুরি ভিত্তিতে হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই। আদালত মনে করছে, এই মুহূর্তে মামলাটির বিশেষ কোনও তাত্পর্যপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যাতে দ্রুত শুনানি করা প্রয়োজন। যদিও সন্দীপ ঘোষের পক্ষ থেকে তার রেজিস্ট্রেশন বাতিলের বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে, আদালত স্পষ্ট করেছে যে, পুজোর ছুটির পরে বিষয়টি নিয়ে পুনরায় আলোচনা হতে পারে।
সন্দীপ ঘোষের সামনে ভবিষ্যৎ
ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়া কোনও চিকিৎসকের জন্য অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা। সন্দীপ ঘোষের ক্ষেত্রেও এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলির পরিণতি এবং এই রেজিস্ট্রেশন বাতিলের বিরুদ্ধে তার লড়াই, দুটি দিকই তার পেশাগত জীবনের উপর প্রভাব ফেলবে। এখন দেখার বিষয়, আদালতে সন্দীপ ঘোষ তার বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেন কি না এবং তার ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন পুনরুদ্ধার হয় কি না।
4o

