Saturday, April 12, 2025

স্ট্রেস কমাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে মাসাজ, তবে সাবধানে নিতে হবে এই সিদ্ধান্ত

Share

স্ট্রেস কমাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে মাসাজ!

বার্ষিক পরীক্ষা, খাতা দেখা, বোর্ডের ডিউটি, সঙ্গে সংসারের দায়িত্ব—এই চাপের মাঝে হাঁপিয়ে উঠছিলেন স্কুলশিক্ষিকা প্রজ্ঞাপারমিতা। মাথাব্যথা, অনিদ্রা, উদ্বেগ—সব মিলিয়ে যেন দমবন্ধ অবস্থা। এমন সময় এক সহকর্মীর পরামর্শে মাসাজ থেরাপির কথা ভাবেন তিনি। প্রশ্ন উঠতে পারে—এই মাসাজ কি সত্যিই মানসিক চাপ কমাতে কার্যকর?

চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, ওষুধ ছাড়াও নানা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে, যেগুলির মধ্যে মাসাজও একটি। যেমন ব্যায়াম, হাঁটা, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন বা ধূমপান-মদ্যপান বন্ধ করাও শরীর ও মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। মাসাজ থেরাপি মূলত এমন এক উপায় যা ওষুধ ছাড়াই দেহ ও মনকে স্বস্তি দিতে পারে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, যখন আমরা অতিরিক্ত চাপের মধ্যে থাকি, তখন শরীরে অ্যাড্রিনালিন নামক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এটি দেহে স্ট্রেস আরও বাড়িয়ে তোলে, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, ঘাম হতে থাকে, রক্তচাপ বাড়ে—যা শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এই স্ট্রেস কমাতেই দরকার ‘হ্যাপি হরমোন’ অর্থাৎ এন্ডরফিন, যা শরীর তখনই বেশি পরিমাণে নিঃসরণ করে যখন আমরা মানসিকভাবে ভালো থাকি। মাসাজ সেই সুখানুভূতির পথ খুলে দেয়।

তাহলে কেন এমন ভালো লাগে মাসাজের পর?

ফিজিওথেরাপিস্ট সুরজিৎ রায় বলেন, “স্ট্রেসের কারণে শরীরের পেশি শক্ত হয়ে যায়। মাসাজ সেই পেশিকে শিথিল করে, রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং এক ধরনের হালকা ও মুক্ত অনুভূতি দেয়। মানসিক দিক থেকেও অনেকটা চাপমুক্ত বোধ হয়।”

তবে, মাসাজ কি একমাত্র সমাধান?

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আবীর মুখোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, মাসাজ কার্যকর হলেও তা একমাত্র চিকিৎসা নয়। স্ট্রেস বা উদ্বেগের জটিলতা অনুযায়ী ওষুধ, সাইকোথেরাপি, জীবনযাত্রার পরিবর্তন ইত্যাদির প্রয়োজন হতে পারে। মাসাজ অনেক সময় পরিপূরক হিসেবে কাজ করে—অর্থাৎ অন্য চিকিৎসার কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে।

তবে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—যে মাসাজ থেরাপিস্টকে আপনি বেছে নিচ্ছেন, তিনি প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ কি না, তা ভালো করে যাচাই করা। কারণ সঠিক জ্ঞান ছাড়া মাসাজ করলে নার্ভ, পেশি বা হাড়ের ক্ষতি হতে পারে। যাদের মেরুদণ্ড, জয়েন্ট বা ত্বকের সমস্যা আছে, তারা বিশেষভাবে সতর্ক না হলে উল্টো বিপদে পড়তে পারেন।

ডাক্তার তালুকদার বলছেন, কারও রক্তচাপ বেশি বা কম, বা চোট রয়েছে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মাসাজ করানো ঠিক নয়। থেরাপিস্টের সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিলেই সঠিক উপকার পাওয়া সম্ভব।

তাই মাসাজ পার্লারে হুট করে গিয়ে রিল্যাক্সেশন খোঁজার আগে একটু ভাবুন। আপনার শরীরের যা প্রয়োজন, তা বুঝে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন। কারণ একই চিকিৎসা একের জন্য উপকারী হলেও, অন্যের জন্য হতে পারে বিপজ্জনক। মাসাজ হোক স্বস্তির চাবিকাঠি—তবে সচেতনতার সঙ্গেই।

ধোনির পরামর্শে গ্রহের বদল! অক্ষরের সাফল্যের নেপথ্যে ‘জ্যোতিষী’ মাহি

Read more

Local News