Monday, December 1, 2025

সহজলভ্য পেয়ারা: সস্তা ফলেই লুকিয়ে আছে অমূল্য স্বাস্থ্যগুণ

Share

সহজলভ্য পেয়ারা!

ফলের বাজারে এখন নানান দামী বিদেশি ফলের ছড়াছড়ি—কিউয়ি, অ্যাভোকাডো, ব্লুবেরি বা ড্রাগন ফ্রুট। সেলিব্রিটি ডায়েট চার্টে নিয়মিতই দেখা যায় সেসব ফল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, আমাদের চেনা-জানা পেয়ারা পুষ্টিগুণে সেই সব দামী ফলকে একেবারেই টক্কর দিতে সক্ষম। সহজলভ্য এই ফলের স্বাস্থ্যগুণ কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আপেলকেও ছাড়িয়ে যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

পেয়ারাকে বলা হয় ভিটামিন সি–এর ভাণ্ডার। যেখানে ১০০ গ্রাম আপেলে মাত্র ৩১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, সেখানে সমপরিমাণ পেয়ারায় পাওয়া যায় প্রায় ২২৮ মিলিগ্রাম। নিয়মিত পেয়ারা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে, বিশেষত সর্দি, জ্বর কিংবা ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।

কম ক্যালোরিতে পুষ্টিতে ভরপুর

পেয়ারায় রয়েছে ভিটামিন এ, বি-কমপ্লেক্স, ই এবং ফোলেট। পাশাপাশি পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার ও প্রোটিনও আছে যথেষ্ট পরিমাণে। অথচ ১০০ গ্রাম পেয়ারায় কেবল ৬৮ ক্যালোরি থাকে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ বা মেদ ঝরাতে চাইলে পেয়ারা এক দুর্দান্ত পছন্দ হতে পারে।

ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য উপকারী

স্বাদে মিষ্টি হলেও পেয়ারার গ্লাইসেমিক সূচক অনেক কম। তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। শুধু ফল নয়, পেয়ারাপাতার চাও রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সমান কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।

হজমশক্তি বাড়ায়

মানবদেহের বহু রোগের সূত্রপাত পেট থেকে হয়। পেয়ারা ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্ষতিকর জীবাণুকে দূরে রাখে। ফলে নিয়মিত পেয়ারা খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং হজমের সমস্যাও কমে।

হৃদ্‌যন্ত্রের বন্ধু

হার্টকে সুস্থ রাখতে পটাশিয়াম, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অপরিহার্য। এই তিনটি উপাদানই পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় পেয়ারায়। নিয়মিত পেয়ারা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, কোলেস্টেরল জমতে পারে না এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি পাকা পেয়ারা খাওয়ার ফলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে আসে।

ত্বককে রাখে সতেজ

ভিটামিন সি-এর কারণে পেয়ারা শরীরে কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। এমনকি পেয়ারাপাতার রস ব্রণ সারাতে এবং রোদের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করতেও কার্যকরী।

নারীদের ঋতুকালীন যন্ত্রণায় স্বস্তি

মাসিক চলাকালীন অনেক মহিলারই পেটে ও কোমরে ব্যথা হয়। গবেষণায় প্রমাণিত, পেয়ারাপাতার নির্যাস অনেক সময় আইবুপ্রোফেনের মতো ব্যথানাশকের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। ফলে এই প্রাকৃতিক সমাধান যন্ত্রণার মুহূর্তে আরাম দেয়।

উপসংহার

দামী বিদেশি ফলের পিছনে না ছুটে, হাতের কাছে থাকা পেয়ারাকেই যদি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা যায়, তবে অজস্র সমস্যার সমাধান সম্ভব। সস্তা, সহজলভ্য অথচ অসাধারণ গুণে ভরপুর পেয়ারা আমাদের সুস্থ জীবনের এক নীরব সহচর।

পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি জ়েলেনস্কি, তবে আগাম শর্তে নয়

Read more

Local News