শুল্কযুদ্ধে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাশে চিন!
বিশ্ব অর্থনীতিতে শুল্কযুদ্ধ ফের উথাল-পাথাল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে চর্চিত বিষয় – আমেরিকা ও চিনের টানাপোড়েন। এবার সেই উত্তেজনার মধ্যেই মালয়েশিয়া সফর থেকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়ে দিলেন, আমেরিকার একমুখী নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির পাশে থাকবে চিন।
যদিও শি জিনপিং সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্প বা আমেরিকার নাম নেননি, তাঁর বার্তার মর্মার্থ খুবই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “ভূরাজনৈতিক সংঘাত এবং একমুখী ও রক্ষণশীলতার অভিঘাতে যখন এই অঞ্চল চাপে, তখন চিন ও মালয়েশিয়া একসঙ্গে থেকে এই চাপ মোকাবিলা করবে।”
তাঁর এই বক্তব্যের সময় ও প্রেক্ষাপট খুব তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এই একই দিনে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প সরকার চিনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৪৫ শতাংশ করতে চলেছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে মার্কিন বাজারে চিনা পণ্যের প্রবেশ আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি আসলে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিরই প্রতিফলন, যেখানে আমদানি নিরুৎসাহিত করে ঘরোয়া শিল্পকে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে বেজিং।
চিনের পক্ষে এই শুল্ক বোঝা বহু আগেই চাপ সৃষ্টি করেছে। এর আগে ভারতের দিকেও পরোক্ষে সাহায্যের বার্তা পাঠিয়েছিল বেজিং, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে শুল্কনীতির মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছিল। তবে অস্ট্রেলিয়া সেই প্রস্তাব সাফ না বলে দিয়েছে। ফলে অনেকটাই একা পড়েছে চিন।
এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চিনের কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। মালয়েশিয়ায় দাঁড়িয়ে জিনপিংয়ের এই বার্তা শুধু বন্ধুত্বের প্রতিশ্রুতি নয়, বরং স্পষ্ট ইঙ্গিত—বিশ্ববাজারে আমেরিকার একক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত চিন।
বিশ্লেষকদের মতে, শুল্কযুদ্ধ যতই গভীর হোক, চিন এখন কৌশলী পন্থা অবলম্বন করছে। সরাসরি আক্রমণের পথে না গিয়ে, তারা বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক জোট তৈরির মাধ্যমে নিজের অবস্থান মজবুত করতে চাইছে।
বিশ্ব বাণিজ্যের ইতিহাসে এমন ঘটনা নতুন নয়, তবে ট্রাম্প সরকারের একতরফা নীতির জেরে গ্লোবাল সাপ্লাই চেনের ভারসাম্য বারবার বিঘ্নিত হচ্ছে। এই অবস্থায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সামনে এখন বড় প্রশ্ন—তারা কি আমেরিকার পাশে থাকবে, না কি চিনের প্রস্তাবে ভরসা রাখবে?
চিন আপাতত নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এখন অপেক্ষা, প্রতিবেশী দেশগুলির জবাব কী আসে।
মুর্শিদাবাদে ধীরে ধীরে স্বস্তির হাওয়া, ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ