শাহরুখ আসলে খুবই মধ্যবিত্ত মানুষ!
বলিউডের কিং খান শাহরুখ খানকে আমরা সবাই জানি এক সুপারস্টার, যিনি কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে রাজত্ব করেন। কিন্তু পরিচালক অনুভব সিন্হা তাঁর ব্যক্তিত্ব নিয়ে এক বিশেষ মন্তব্য করেছেন, যা একটু ভিন্ন। অনুভব বললেন, শাহরুখ আসলে খুবই মধ্যবিত্ত মানসিকতার মানুষ। আর এটা শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকে নয়, বরং মনোভাবের দিক থেকেও।
অনুভব সিন্হা পরিচালিত ছবি ‘রা ওয়ান’-এ শাহরুখ খান অভিনয় করেছিলেন। যদিও সিনেমাটি বক্স অফিসে বড় সাফল্য পায়নি, তবু এই ছবির ভাবনা এবং নতুন ধাঁচ বলিউডে এক নতুন দিশা দেখিয়েছিল। এই কাজের সময় শাহরুখের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে অনুভব জানান, কতটা সাধারণ মনের মানুষ তিনি।
অনুভব বলেন, “খুব অদ্ভুত বিষয়, শাহরুখের মধ্যে এক ধরণের মধ্যবিত্ত মানসিকতা কাজ করে। এটা মজা করে বলছি না। মধ্যবিত্ত মানে শুধু টাকা-পয়সা নয়, মনের দিক থেকেও মধ্যবিত্ত হতে হয়। আমি ওকে বলেছি, তুমি মধ্যবিত্ত ধরনের মানুষ। আর ও হাসিমুখে সেটা স্বীকার করে নেয়।”
শাহরুখের জীবনে আর্থিক অসুবিধা নেই—তার নিজের নামে বিশ্বখ্যাত সম্পদ আর প্রাচুর্যের অভাব নেই। তবু কেন অনুভব তাকে মধ্যবিত্ত বললেন? তিনি ব্যাখ্যা করেন, “যখন আপনি দামি ব্র্যান্ডের ব্যাগ পাবেন, তখন কি সেটা দেখে আনন্দ পাবেন, নাকি আপনার বোনের খুশি দেখে বেশি ভালো লাগবে? জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক—এগুলোই প্রকৃত মধ্যবিত্ত মনের পরিচায়ক।”
অনুভব আরও জানান, শাহরুখ খুব যত্ন করে নিজের পরিবারের সদস্যদের প্রতি। তিনি তাঁর বোন শেহনাজ়ের প্রতি নজর রাখেন এবং তিন সন্তান আরিয়ান, সুহানা ও আব্রামের যত্নে কোনো ত্রুটি রাখেন না। এই পারিবারিক দায়িত্বশীলতা এবং সাধারণ মনের কারণে অনুভব শাহরুখকে মুগ্ধ।
“একজন মানুষ যিনি সারা বিশ্বে এত জনপ্রিয়, তবুও মাটির মানুষ থেকে যাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার,” বললেন অনুভব। “তার টাকার কথা তো আলাদা, সেটা নিয়ে কিছু বলার দরকারই নেই। কিন্তু এমন একটা মানুষকে কাছ থেকে জানা আমার জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ‘রা ওয়ান’ বানানোর থেকে বেশি আনন্দ হয়েছে ওকে ব্যক্তিগতভাবে জানতে পেরে।”
শাহরুখের এই সাধারণ ও মানবিক দিকটাই তাঁকে বলিউড বাদশাহ হওয়ার পরও একজন সাধারণ মানুষের মতো করে রেখেছে। আর তাই অনেকে তাঁর প্রতি এত গভীর স্নেহ পোষণ করেন। সফলতার উচ্চ শিখরে থাকা সত্ত্বেও নিজের মাটির গন্ধ হারাননি শাহরুখ—এটাই হয়তো তাঁকে এতটা প্রিয় করে তুলেছে।
অন্যদিকে, এই কথোপকথনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের আসল আনন্দ কোথায় লুকিয়ে থাকে—স্রেফ বড় বড় পদ, ধনী থাকার মধ্যে নয়, বরং ছোট ছোট মুহূর্তে এবং সম্পর্কের গভীরে। শাহরুখ খান সেই জীবনের মর্ম উপলব্ধি করে থাকেন, তাই তিনি সত্যিকারের মধ্যবিত্ত মনের মানুষ বলে অনুভব মনে করেন।
এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সবার জন্যই একটি সুন্দর শিক্ষা, যেখানে টাকা-পয়সার বাইরেও মনের মূল্য ও সম্পর্কের গুরুত্বকে বলা হয়। বলিউড বাদশাহয়ের মধ্যে এই মানবিকতা যে আজও অক্ষুণ্ণ, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
কন্যাকে বিশেষ কারণে কান-এ নিয়ে যান ঐশ্বর্যা! বিদেশি উৎসবে আরাধ্যার প্রিয় মুহূর্ত কী?

