Friday, March 21, 2025

মালদহে আবার রক্তক্ষয়ী ঘটনা: গুলি ও পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন তৃণমূল কর্মী, আহত অঞ্চল সভাপতি

Share

মালদহে আবার রক্তক্ষয়ী ঘটনা

আবার উত্তাল মালদহ। মাত্র ১২ দিন আগে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের ঘটনা ঘটেছিল, তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের মালদহে গুলি চলল। মঙ্গলবার কালিয়াচকের নয়া বস্তি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে এবং ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে এক তৃণমূল কর্মীকে খুন করা হয়। আহত হয়েছেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ।

কীভাবে ঘটল এই মর্মান্তিক হামলা?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে নয়া বস্তি এলাকায় একটি নিকাশি এবং রাস্তা উদ্বোধনের অনুষ্ঠান চলছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের নওদা যদুপুর এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ। অনুষ্ঠানের মধ্যেই হঠাৎ করে একদল দুষ্কৃতী বকুলের ওপর হামলা চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বকুল। হামলায় আরও কয়েকজন আহত হন।

ঘটনার ভাইরাল ভিডিও

ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রথমে বকুলদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এরপর, এক ব্যক্তির মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা এখনও যাচাই করেনি প্রশাসন।

মালদহে

আহত ও নিহতের খবর

বকুল শেখ এবং আরেক তৃণমূল কর্মী এসারুদ্দিন শেখকে গুরুতর আহত অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের অবস্থা সংকটজনক। অন্যদিকে, হাসান শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসান ওই অঞ্চলের পরিচিত তৃণমূল কর্মী ছিলেন এবং মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কেন ঘটল এই হামলা?

এই হামলার সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিকভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বকুল শেখ অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা এই ঘটনার পেছনে রয়েছেন। তিনি আরও জানান, অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করছিলেন ওই নেতা এবং তাঁর সঙ্গীরা। এর মধ্যেই বাইকে চেপে কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে গুলি চালায়।

বকুলের অভিযোগের তির জাকির শেখ নামে এক তৃণমূল নেতার দিকে। যদিও পুলিশ এখনও বিষয়টি তদন্ত করছে এবং কাউকে গ্রেফতার করেনি।

প্রশাসন ও নেতাদের প্রতিক্রিয়া

মালদহের তৃণমূল নেতা আশিস কুন্ডু বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। দোষীদের অবশ্যই চিহ্নিত করা হবে।” ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যদি জানতে চান, তখন জানানো হবে।”

দুলাল সরকার খুনের ঘটনার রেশ

উল্লেখ্য, ২ জানুয়ারি ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়া এলাকায় নিজের কারখানার সামনে তৃণমূল নেতা দুলাল (বাবলা) সরকারকে গুলি করে খুন করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, দুলাল প্রাণ বাঁচাতে কারখানার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলেও তিন দুষ্কৃতী তাঁকে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যা করে। সেই ঘটনার তদন্তে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।

দুলালের খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল আরেক তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করার পর তৃণমূল তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। কিন্তু সেই ঘটনায় এখনো চাপা উত্তেজনা রয়েছে, যা মঙ্গলবারের হামলার সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

শেষ কথা

মালদহের এই ঘটনাগুলি শুধু স্থানীয় রাজনীতির অস্থিরতা নয়, গোটা জেলার আইন-শৃঙ্খলার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলছে। একের পর এক তৃণমূল নেতার খুন এবং হামলার ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কতটা কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সত্যিকারের সাধ্বী নাকি শুধুই লোকদেখানো! নেটপ্রভাবী হর্ষা রিচারিয়া নিয়ে কেন এত বিতর্ক?

Read more

Local News