Thursday, May 8, 2025

ভূমিকম্পে কাঁপল টোঙ্গা, জারি সুনামি সতর্কতা! আতঙ্কে দ্বীপরাষ্ট্র

Share

ভূমিকম্পে কাঁপল টোঙ্গা

প্রকৃতির রুদ্র রূপ আবারও ধরা দিল প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে। এবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গা। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.১, যার ফলে পুরো দ্বীপজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। শুধু ভূমিকম্পই নয়, এর পরপরই সুনামির সতর্কতা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভূমিকম্পের উৎসস্থল ও ভয়াবহতা

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল টোঙ্গার পাঙ্গাই গ্রামের ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে, মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। আমেরিকার ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের কারণে সমুদ্রের নিচে ব্যাপক কম্পন সৃষ্টি হয়, যা সুনামির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে।

সুনামির সতর্কতা ও সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি

ভূমিকম্পের পরই নিউয়ে ও টোঙ্গার উপকূলে ০.৩ থেকে ১ মিটার উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র থেকে ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সমুদ্র উত্তাল থাকবে এবং সুনামির ঢেউ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ জানা যায়নি, তবে স্থানীয়রা আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।

টোঙ্গা—প্রাকৃতিক দুর্যোগের কেন্দ্রবিন্দু

টোঙ্গা মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের “রিং অফ ফায়ার” অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত, যা পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ১৭০টিরও বেশি ছোট-বড় দ্বীপের এই রাষ্ট্রটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায় ১ লাখ মানুষের বাস এই দেশে, যেখানে পর্যটনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে উঠেছে। তবে বারবার ভূমিকম্প, সুনামি এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা বারবার ব্যাহত হয়।

সম্প্রতি এশিয়ায় একের পর এক ভূমিকম্প!

টোঙ্গার আগে গত কয়েকদিন ধরেই এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্পের তাণ্ডব দেখা গেছে।

  • মায়ানমার: মাত্র কয়েকদিন আগেই সেখানে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যার ফলে ১,৬০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ
  • থাইল্যান্ড: ভূমিকম্পের প্রভাবে ব্যাংককের একটি ৩০ তলা ভবন ধসে পড়ে। এখনো সেখানে বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন।
  • নেপাল ও ভারত: পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতেও ভূমিকম্পের হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি

টোঙ্গার প্রশাসন ইতোমধ্যেই উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জরুরি উদ্ধারকারী দলগুলোকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে যেকোনো ধরনের বিপর্যয় হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

শেষ কথা

প্রাকৃতিক দুর্যোগ কখন আসে, তা অনুমান করা কঠিন। তবে বারবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠা দেশগুলোর জন্য এটি একটি কঠিন সময়। টোঙ্গা এবং আশপাশের দেশগুলোর জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সচেতনতা ও প্রস্তুতি। সুনামির আশঙ্কা থাকায় উপকূলবর্তী জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।

প্রকৃতির এই ভয়াবহ রুদ্ররূপের সামনে মানুষ কতটা অসহায়, তা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল টোঙ্গার এই ভূমিকম্প।

বিজেপি-এডিএমকে জোট নিয়ে নতুন জল্পনা: শর্তই কি আলোচনার মূল বিষয়?

Read more

Local News