বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা!
রাজ্যের হাজার হাজার স্কুলে এখন অস্বস্তির ছায়া। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) অযোগ্যদের তালিকা তৈরি হয়ে গেলেও, তা নিয়ে এখনও স্কুলগুলোর হাতে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা এসে পৌঁছায়নি। ফলে, বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন রাজ্যের প্রধান শিক্ষকরা।
সাধারণত, মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে স্কুলগুলোর বেতন সংক্রান্ত তথ্য জেলা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে কোষাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর হাতে মাত্র কয়েক দিন বাকি। কিন্তু কে বেতন পাবেন আর কে পাবেন না—এ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। প্রধান শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষা দফতরের কোনও বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশ না থাকায় তারা কিছুই করতে পারছেন না।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দুশ্চিন্তা:
বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা আমরা জানি। কিন্তু শিক্ষা দফতর থেকে এখনো কিছু নির্দেশ আসেনি। ফলে আমরা জানি না কারা তালিকায় আছেন আর কারা বাদ পড়েছেন।”
তিনি আরও জানান, “বেতন সংক্রান্ত দায়িত্ব নিতে গেলে স্পষ্ট সরকারি নির্দেশ ছাড়া আমরা ঝুঁকি নিতে পারি না। কারণ ভুল করলে তার দায় প্রধান শিক্ষককেই নিতে হবে।”
শিক্ষক নেতাদের বক্তব্য:
পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কারা ‘যোগ্য’ আর কারা ‘অযোগ্য’ তা একপ্রকার পরিষ্কার। তবুও আমরা শিক্ষা দফতরের পাঠানো চূড়ান্ত তালিকার অপেক্ষায় রয়েছি। আগেভাগে কিছু করলে সেটা ভবিষ্যতে আমাদের বিপদে ফেলতে পারে।”
কি বলছে কমিশন ও দফতর?
সূত্র অনুযায়ী, স্কুল সার্ভিস কমিশন ইতিমধ্যেই ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের তালিকা শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছে। সম্ভাবনা রয়েছে, আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এই তালিকা প্রকাশ পাবে। এরপর তালিকাটি জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে যাবে এবং তারাই তা স্কুলগুলিতে পাঠাবেন।
দফতরের এক কর্তার কথায়, “আমরা চেষ্টা করছি যাতে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সমস্ত স্কুলে তালিকা ও বেতন সংক্রান্ত নির্দেশিকা পৌঁছে যায়। তবে কিছুটা সময় লাগবেই, কারণ বিষয়টি বিচারাধীন ছিল।”
প্রধান শিক্ষকদের উদ্বেগ:
যাঁরা বেতন পাবেন না, তাঁদের নাম বাদ দিলে সফটওয়্যারে তা আপডেট করতে হবে। আবার কোনও ভুল হলে এর দায় পড়বে প্রধান শিক্ষকের উপর। এই অবস্থায় কেউই নিজেদের দায়িত্বে কোনও পদক্ষেপ নিতে চান না।
শেষ কথা:
প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে দেরির খেসারত দিতে হচ্ছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। শুধু আদালতের রায় নয়, রায়ের ভিত্তিতে স্পষ্ট দিকনির্দেশ না এলে বেতন সমস্যায় জর্জরিত হবে রাজ্যের বহু স্কুল।
এখন দেখার, শিক্ষা দফতর কত দ্রুত এই জট কাটাতে পারে—আর প্রধান শিক্ষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন কি না।
এসএসসি নিয়োগে আসছে বড় পরিবর্তন: পরীক্ষার্থীরা এবার উত্তরপত্রের কার্বন কপি পাবেন!