পেটের মেদ ঝরবে, ঋতুস্রাব হবে নিয়মিত!
পেটের মেদ যেমন শরীরচর্চার পথে বড় বাধা, তেমনই এটি অনেক শারীরিক সমস্যার উৎসও বটে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে মেদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, অনিয়মিত ঋতুস্রাব, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা পিসিওএস-এর মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কিন্তু ঘরোয়া ভাবে সহজ একটি যোগাসন নিয়মিত করলে এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব—আর সেটি হলো ‘নাভাসন’।
কীভাবে করবেন ‘নাভাসন’?
এই যোগাসনটির নাম এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘নাভি’ (নাভি অঞ্চল) থেকে। নিয়মিত অভ্যাস করলে পেটের গভীর পেশিগুলোর উপর দারুণ কাজ করে এটি। কীভাবে করবেন? দেখে নিন ধাপে ধাপে:
১. প্রথমে একটি ম্যাটে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন।
২. এবার গভীর শ্বাস নিতে নিতে শরীরের ওপরের অংশ (মাথা, ঘাড় ও বুক) এবং দুই পা একসঙ্গে মাটির ওপর থেকে তুলুন।
৩. শরীর এমনভাবে তুলুন যেন আপনি নৌকার (Boat) মতো দেখতে লাগছেন।
৪. এই অবস্থায় ১০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন।
৫. এরপর ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আবার আগের ভঙ্গিমায় ফিরে আসুন।
নাভাসনের উপকারিতা
🧘♀️ পেট ও কোমরের মেদ কমায়
অনেক মহিলারাই তলপেট ও কোমরের বাড়তি চর্বি নিয়ে অতিষ্ঠ। নাভাসন পেটের গভীর পেশিগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করে মেদ গলাতে সাহায্য করে এবং পেশিকে শক্তিশালী করে তোলে।
🌿 হজমের সমস্যা দূর করে
নাভাসন হজমে সহায়তা করে। নিয়মিত চর্চা করলে পেট ফাঁপা, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। হজমের উন্নতির জন্য এই আসন বেশ কার্যকর।
⚖️ শরীরের ভারসাম্য উন্নত করে
নাভাসনে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়, ফলে নিয়মিত অভ্যাসের ফলে শরীরের সমন্বয় ক্ষমতা এবং মনোযোগ বাড়ে।
💫 হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে
মহিলাদের পিসিওএস (PCOS) বা ঋতুচক্রজনিত সমস্যা থাকলে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে নাভাসন অভ্যাস করলে হরমোন ভারসাম্য রক্ষা পায়। এতে ঋতুস্রাবও ধীরে ধীরে নিয়মিত হতে শুরু করে।
সতর্কতা
যদিও নাভাসন অত্যন্ত উপকারী, তবে যাঁদের কোমরে বা পিঠে সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই আসন শুরুর আগে অবশ্যই একজন যোগ প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিন। গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও এই আসন নিষেধ।
উপসংহার
নাভাসন শুধু ওজন কমানোর সহজ উপায় নয়, বরং এটি একজন মহিলার সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার এক দারুণ পথ। সময়ের অভাবে জিমে যেতে না পারলেও দিনে মাত্র ৫-১০ মিনিট এই আসন অভ্যাস করলেই অনেক সুফল মিলবে। নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়ার পথ নাভাসন থেকেই শুরু হোক!