পুনেতে গুইলান-ব্যারে সিনড্রোমের প্রকোপ
পুনে শহরে বিরল স্নায়ুবিক অসুখ গুইলান-ব্যারে সিনড্রোম (GBS)-এর উদ্বেগজনক বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক। ইতিমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১০১ ছাড়িয়েছে। এই হঠাৎ বৃদ্ধি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি দল শীঘ্রই ঘটনাস্থলে তদন্তে যাবে।
গুইলান-ব্যারে সিনড্রোম: প্রাদুর্ভাবের পরিধি ও বিশ্লেষণ
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, আক্রান্তদের বেশিরভাগই পুনে শহর এবং তার আশেপাশের এলাকার বাসিন্দা।
- পুনে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এলাকা: ৮১ জন
- পিম্প্রি-চিঞ্চওয়াড় কর্পোরেশন এলাকা: ১৪ জন
- প্রতিবেশী জেলা: ৬ জন
- সন্দেহভাজন মৃত্যু: সোলাপুরে ১ জন
বয়স ভিত্তিক পরিসংখ্যান:
- ৯ বছরের নিচে: ১৯ জন
- ১০-১৯ বছর: ১৫ জন
- ২০-২৯ বছর: ২০ জন
- ৩০-৫৯ বছর: ৩৮ জন
- ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে: ৯ জন
লিঙ্গ পরিসংখ্যান:
- পুরুষ: ৬৮ জন
- মহিলা: ৩৩ জন
গুরুতর পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা
আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা গুরুতর, যাঁদের ভেন্টিলেটর সাপোর্ট প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিভাগ সংক্রমণ নির্ধারণে একাধিক পরীক্ষা চালিয়েছে:
- ২৩টি রক্তের নমুনায় ডেঙ্গু, জিকা এবং চিকুনগুনিয়ার উপস্থিতি নেগেটিভ পাওয়া গেছে।
- ১১টি মল নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
- ৯টি নমুনায় নরোভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
- ৩টি ক্ষেত্রে ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি (Campylobacter Jejuni) ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য এলাকা: সিংগাড় রোড, খাদাকওয়াসলা, ধয়ারি এবং কিরকাটওয়াড়ি—এই এলাকাগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
তদন্ত ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
সংক্রমণ ঠেকাতে এবং এর উৎস খুঁজতে স্বাস্থ্য বিভাগ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে:
- বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করে রাসায়নিক এবং জীবাণু বিশ্লেষণ।
- কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দলের পুনে সফর এবং পরিস্থিতি মূল্যায়ন।
- সংক্রমণ প্রবণ এলাকায় পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি।
- পরিবেশগত কারণ নির্ধারণের জন্য বিশেষ তদন্ত।
- পানীয় জলের সরবরাহ ব্যবস্থার তদারকি।
নরোভাইরাস এবং ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনির উপস্থিতি পানীয় জলের মাধ্যমে সংক্রমণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বিশেষ নজর দিচ্ছে জলের মান ও সরবরাহের উপর।
গুইলান-ব্যারে সিনড্রোমের প্রাথমিক লক্ষণ
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সাধারণত পা থেকে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে হাত ও শরীরের উপরের অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
- দুর্বলতা বা ঝিনঝিনে অনুভূতি
- ক্রমাগত পেশির দুর্বলতা
যদি এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়, দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত।
উপসংহার
পুনেতে GBS-এর প্রাদুর্ভাব সবার জন্যই সতর্কবার্তা। স্বাস্থ্য বিভাগের দ্রুত পদক্ষেপ এবং আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পানীয় জলের মান নিশ্চিত করা এবং জনগণকে সচেতন করা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি।
পদ্ম সম্মান: পদ্মবনের বাইরে কি আদৌ পৌঁছল না বিজেপি? ২০২৬-এর ভোটের আগে সুযোগ হাতছাড়া?
