Sunday, May 18, 2025

পুজোর দিন হিংসার ভুয়ো ছবি? বিজেপির পোস্টে পাল্টা জবাব রাজ্য পুলিশের

Share

বিজেপির পোস্টে পাল্টা জবাব রাজ্য পুলিশের!

পুজো-উৎসবের আবহে একাধিক সহিংসতার ছবি পোস্ট করে আলোড়ন ফেলে দিল রাজ্য বিজেপি। তাদের দাবি, এই ছবিগুলি রাজ্যে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময়কার অশান্তির। তবে এই দাবি একেবারে উড়িয়ে দিয়ে ভুয়ো আখ্যা দিল রাজ্য পুলিশ। পাল্টা পোস্টে তারা জানাল, এই ছবিগুলি পুজোর সময়ের নয়, বরং দেশের অন্য প্রেক্ষাপটে তোলা—যেমন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভ।

রবিবার রাজ্য বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পেজে অগ্নিসংযোগ, বিক্ষোভ ইত্যাদি কিছু ছবি পোস্ট করে দাবি করা হয়, রাজ্যে ধর্মীয় উৎসবের সময় অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশের পাল্টা দাবিতে বলা হয়, এই ছবিগুলির বেশিরভাগই রাজ্যের নয় এবং এদের পেছনের ঘটনা পুজোর সময়কারও নয়।

রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়, বিজেপির পোস্টে যে ছবিগুলিকে গণেশ চতুর্থী বা সরস্বতী পুজোর সময়কার বলা হয়েছে, সেগুলি আদতে উত্তরপ্রদেশ, অসম কিংবা কর্নাটকের মতো রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের সময়ের ছবি। পুলিশের দাবি, বিজেপির এই পদক্ষেপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা।

কী পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন?

এই ঘটনার সঙ্গে মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে জড়িয়ে দেখছে প্রশাসন। সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তেজনার প্রেক্ষিতে মুর্শিদাবাদের সুতি, শমসেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতিমধ্যেই ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় চলছে যৌথ টহলদারি। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তবে মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও বীরভূমের কিছু এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে, যাতে গুজব বা ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়তে না পারে।

তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপির চুপ

রাজ্য পুলিশের পোস্ট ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সাকেত গোখলে কড়া ভাষায় বলেন, “বিজেপি যেভাবে ভুয়ো সাম্প্রদায়িক ছবি ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক।” একইসঙ্গে কুণাল ঘোষ, সাগরিকা ঘোষ-সহ অন্যান্য নেতারাও বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারকে ‘ভুয়ো তথ্যের কারখানা’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

তবে এই ইস্যুতে এখনও পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

গুজবে কান নয়

রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার আবেদন করেছেন, সাধারণ মানুষ যেন গুজবে কান না দেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য শেয়ার না করেন। তিনি আরও জানান, অশান্তির জেরে যেসব মানুষ ঘর ছেড়েছেন, তাঁদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। ধুলিয়ান, সুতি, শমসেরগঞ্জ থেকে ঘরছাড়া মানুষজন গঙ্গা পার হয়ে মালদহের বৈষ্ণবনগরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের জন্য চালু হয়েছে ত্রাণ শিবির।

রাজ্য পুলিশের জঙ্গিপুর জেলার সুপার আনন্দ জানিয়েছেন, “ঘরছাড়া মানুষেরা ফিরতে চাইলে প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।” এখন দেখার, রাজ্যের এই পাল্টা পদক্ষেপে গুজব ছড়ানোর প্রবণতা কিছুটা হলেও কমে কি না।

অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ, আর ইউসুফ পঠান ‘ফুরফুরে চা’-এ মশগুল! ক্ষোভে ফুঁসছে জনতা

Read more

Local News