পিছন দিকে হাঁটার বিস্ময়কর উপকারিতা!
সম্প্রতি লন্ডন সফরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে ‘ব্যাক ওয়াকিং’ বা উল্টো হাঁটতে দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু জানেন কি, এই উল্টো হাঁটা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং এটি একটি বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত শরীরচর্চার অংশ? ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও বহু ক্রীড়াবিদ ও ফিটনেস প্রশিক্ষকরা এই পদ্ধতিতে ভরসা রাখেন।
কেন জনপ্রিয় ব্যাক ওয়াকিং?
শরীর ও মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ব্যাক ওয়াকিং। নিয়মিত উল্টো দিকে হাঁটা মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে, ভারসাম্য উন্নত করে এবং পায়ের গাঁট ও হাড়ের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। শুধু তাই নয়, এটি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত কার্যকরী।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক
ইতালির মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এবং বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষণা অনুযায়ী, ব্যাক ওয়াকিং করলে মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স সক্রিয় হয়। এই অংশটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায়। এমনকি, যারা নিয়মিত উল্টো হাঁটেন, তারা সমস্যার সমাধান করতে তুলনামূলকভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন।
খেলোয়াড়দের পছন্দ
বিশ্বের বহু ক্রীড়াবিদ তাঁদের প্রশিক্ষণে ব্যাক ওয়াকিং অন্তর্ভুক্ত করেন। বিশেষত টেনিস এবং ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের জন্য এটি কার্যকরী, কারণ এতে পিছনের পেশি শক্তিশালী হয় এবং শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে। মস্তিষ্ক ও শরীরের সমন্বয় বাড়িয়ে তোলে এই পদ্ধতি।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির বৈজ্ঞানিক প্রমাণ
২০১৯ সালে নেদারল্যান্ডসের রেডবন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা উল্টো হাঁটেন বা বাস-ট্রেনে উল্টো দিকে বসেন, তাদের স্মৃতিশক্তি তুলনামূলকভাবে বেশি উন্নত হয়। কারণ, এই ধরনের শারীরিক কার্যকলাপ মস্তিষ্কের নিউরাল নেটওয়ার্ককে আরও সক্রিয় করে তোলে।
শরীরের সামগ্রিক উপকার
উল্টো হাঁটার মাধ্যমে হ্যামস্ট্রিং, গোঁড়ালি এবং কাঁধের পেশিগুলোর শক্তি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে যারা হাঁটু বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। শারীরিক ভারসাম্য রক্ষা করতে এটি সহায়ক, যা বয়স্কদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকরী।
কিভাবে শুরু করবেন?
- প্রথমে সমতল এবং নিরাপদ স্থানে অনুশীলন শুরু করুন।
- প্রতিদিন মাত্র ১০-১৫ মিনিট উল্টো হাঁটার অভ্যাস করুন।
- পেছনে না তাকিয়ে ব্যালেন্স বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
- ধীরে ধীরে সময় ও দূরত্ব বাড়ান।
উপসংহার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেকেই আজ ব্যাক ওয়াকিংয়ের সুফল উপভোগ করছেন। শুধু রাজনীতিবিদ বা ক্রীড়াবিদ নয়, যে কেউ এই অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য এটি হতে পারে এক অসাধারণ পন্থা। আজ থেকেই শুরু হোক উল্টো হাঁটার নতুন অভ্যাস!
বিজেপি-এডিএমকে জোট নিয়ে নতুন জল্পনা: শর্তই কি আলোচনার মূল বিষয়?