পাক অভিনেতার পাশে কেন নীরব বাণী?
পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার পর গোটা দেশ যখন শোক আর ক্ষোভে কাঁপছে, তখন বলিউড অভিনেত্রী বাণী কপূরের নীরবতা ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক। অভিনেত্রী কিছু বলেননি, কিছু লেখেননি—কেবল ব্যস্ত রয়েছেন নিজের নতুন ছবি ‘আবির গুলাল’-এর প্রচারে। এই ছবি দিয়েই বলিউডে ফিরছেন পাকিস্তানি অভিনেতা ফওয়াদ খান। আর সেখানেই যেন ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে বাণীর চুপ করে থাকা।
“দেশ জ্বলছে, আপনি প্রচারে ব্যস্ত?”
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যালীলা গোটা দেশের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়েছে। শাহরুখ খান, সলমন খান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়াসহ একাধিক তারকা সোচ্চার হয়েছেন। কেউ শোক জানিয়েছেন, কেউ প্রতিবাদ করেছেন—সমাজমাধ্যমে কেঁদে উঠেছে দেশ। অথচ, বাণী কপূরের মুখে একটি শব্দও নেই। তাও আবার এমন সময়, যখন তিনি প্রচার করছেন এমন একটি ছবির, যার সহ-অভিনেতা পাকিস্তানের নাগরিক।
“কেন এই নীরবতা, বাণী?”
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই নীরবতা কি ইচ্ছাকৃত? নাকি ফওয়াদের সঙ্গে ছবিতে অভিনয়ের কারণে বিতর্ক এড়াতে চুপ করে আছেন বাণী? কিন্তু দেশবাসীর ক্ষোভকে এড়িয়ে যাওয়াটা কি দায়িত্বশীলতার পরিচয়? অনুরাগীরা সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি বলছেন, “পাক অভিনেতার পাশে দাঁড়িয়ে আপনি কী বার্তা দিচ্ছেন?” ফলস্বরূপ, #BoycottVaaniKapoor ট্রেন্ড করছে টুইটারে।
মহারাষ্ট্রে ছবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রচার চলছে দুবাইয়ে!
ছবিটি নিয়ে অসন্তোষ এতটাই চরমে উঠেছে যে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার নেতা অমেয় খোপকার হলমালিকদের আগে থেকেই সতর্ক করে দিয়েছেন—মহারাষ্ট্রে যেন ‘আবির গুলাল’ মুক্তি না পায়। দেশপ্রেমের প্রশ্নে ফওয়াদ খানের প্রত্যাবর্তন মুম্বইবাসী কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। তাই ছবির সমস্ত প্রচারই সরে গিয়েছে দুবাইয়ে। তবুও ছবিটি মুক্তি পাবে ৯ মে, ভারতে। কিন্তু তখনও কি মানুষ থিয়েটারমুখী হবেন?
প্রতিবেশী দায় এড়ালেও প্রশ্ন উঠছে…
যদিও পাকিস্তান সরকার এখনও পহেলগাঁও হামলার দায় স্বীকার করেনি, কিন্তু দেশের বহু মানুষ মনে করছেন—সন্ত্রাসে নেপথ্যে ইসলামাবাদের হাত রয়েছে। সেই সময়েই একজন পাক অভিনেতার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কি উচিত ছিল? একজন ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে বাণীর কি ন্যূনতম সহানুভূতি প্রকাশ করার প্রয়োজন ছিল না?
সময়ই দেবে জবাব
এই মুহূর্তে ছবির প্রযোজক-পরিচালক কিছু বলছেন না। তাঁরাও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সময়ের উপর ভরসা রাখছেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তি যে কোনও দিন পাল্টে দিতে পারে ছবির ভাগ্য, সেটাও মানছেন অনেকেই। দেশের আবেগ উপেক্ষা করে কি বড় পর্দায় বাজিমাত করা সম্ভব?
বাণীর নীরবতা এখন শুধু ‘চুপ থাকা’ নয়, হয়ে উঠেছে দেশজুড়ে প্রশ্নচিহ্ন।
দেশ ছেড়ে কাতারে সংসার? সইফ-করিনার নতুন জীবন শুরু হতে চলেছে!