Wednesday, May 21, 2025

দল না জানলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিজিৎ! চাপের মুখে চিঠি ছিঁড়ে মুখরক্ষা, ব্রাত্যর সঙ্গে সাক্ষাৎ বাতিল

Share

দল না জানলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিজিৎ!

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বিজেপি সাংসদ ও প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ। শেষমেশ চিঠিই ছিঁড়ে ফেললেন তিনি! মুখরক্ষা তো হল, কিন্তু ততক্ষণে দলের অন্দরেও প্রশ্ন উঠেছে— এমন একতরফা সিদ্ধান্ত তিনি কী করে নিলেন?

বিজেপির অন্দরের খবর, কসবায় চাকরি হারানো শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদ দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিজিৎ। সেই চিঠি শিক্ষামন্ত্রীর হাত ধরে নবান্নে পাঠানোর কথাও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এমনকি, সাক্ষাতের সময়ও নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দলের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এমন উদ্যোগ নেওয়ায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য নেতৃত্ব।

যখন অভিজিৎ বিকাশ ভবনে যাচ্ছিলেন, তখনই বিজেপি বিধায়করা লালবাজারে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আর সেই সময়েই শুভেন্দু অধিকারী একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রীকে ‘চোর বন্দ্যোপাধ্যায়’ বলছেন! দুটো ঘটনা দুই মেরুর, যা দলের অবস্থানকে দুর্বল করে দেয় বলেই মত বিজেপির একাংশের।

এই পরিস্থিতিতে বিজেপির দুই শীর্ষনেতা হস্তক্ষেপ করেন। অভিজিৎকে বার্তা দেওয়া হয়, দলের কৌশলের বাইরে গিয়ে এমন পদক্ষেপে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তারপরেই প্রকাশ্যে এসে চিঠি ছিঁড়ে ফেলেন অভিজিৎ। বলেন, তিনি আর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন না। যদিও তার আগেই তিনি এসএসসি দফতরে গিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন এবং জানান, যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাঁচানো সম্ভব।

ব্রাত্য বসু অবশ্য তীব্র কটাক্ষে জবাব দিয়েছেন। বলেছেন, যদি কসবায় পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে তাঁর সঙ্গে দেখা না করেন, তাহলে এসএসসি-তেও কেন গেলেন? সেটাও তো সরকারি দফতর! তাছাড়া তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, অভিজিৎ তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই টিভি চ্যানেলের লাইভ শো-তে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং চিঠি পাঠানোর কথাও বলেন।

বিজেপির বহু নেতা এই গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ। কারণ, দলে কোনও কৌশল ছাড়া একা সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রথাবিরুদ্ধ। বিশেষ করে, যখন গোটা দল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন অভিজিতের এমন পদক্ষেপ দলের অবস্থান দুর্বল করে দিতে পারত। যদিও শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ না হওয়ায় সমস্যা কিছুটা এড়ানো গেছে।

তবে বিজেপির অন্দরে এক নতুন আশঙ্কা জেগেছে— ভবিষ্যতে অভিজিৎ কি আবার এমন কিছু করবেন? কারণ বিচারপতি থাকাকালীনও তিনি একাধিক মন্তব্যে আলোড়ন তুলেছিলেন। এখন তিনি সাংসদ, দলের প্রতিনিধি। তাঁকে বুঝতে হবে, ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দলের অবস্থান বোঝা জরুরি। না হলে আবারও তাঁকে ঘিরেই তৈরি হবে বিব্রতকর পরিস্থিতি— যার দায় বইতে হবে গোটা দলকেই।

তালা ভাঙার পাল্টা তালা! কসবা থেকে হুগলি—চাকরিহারাদের ক্ষোভে কাঁপছে রাজ্য

Read more

Local News