Thursday, February 13, 2025

দল ও সরকারের ‘মেদ’ ঝরাতে প্রস্তুত তৃণমূল: মমতার স্পষ্ট বার্তা অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকে

Share

দল ও সরকারের ‘মেদ’ ঝরাতে প্রস্তুত তৃণমূল!

নতুন বছরের শুরুতেই সংগঠন এবং প্রশাসন নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের ভবিষ্যৎ রণকৌশল এবং প্রশাসনিক পরিকল্পনা নিয়ে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি। বৈঠকে দল ও সরকারের ‘মেদ’ ঝরানোর সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। একই সঙ্গে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৈঠকের উদ্দেশ্য এবং প্রেক্ষাপট

বছরের শুরুতেই মমতা এবং অভিষেকের মধ্যে এই বৈঠক ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে অভিষেকের নির্ধারিত কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়। মমতা স্পষ্ট করে দেন যে, সংগঠন এবং প্রশাসন— দুই ক্ষেত্রেই জবাবদিহি এবং দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামো আরও শক্তিশালী করতে রদবদল জরুরি।

অভিষেক এই বৈঠকে তাঁর প্রস্তাব ব্যাখ্যা করেন এবং উল্লেখ করেন, আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক কাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হওয়া উচিত। মমতা তাঁর ভাবনায় সম্মতি জানান এবং রাজ্য সভাপতিকে এই পরিবর্তনগুলোর দায়িত্ব সমন্বয় করার নির্দেশ দেন।

রদবদলের প্রস্তুতি এবং লক্ষ্য

বৈঠকে রদবদলের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে মমতা এবং অভিষেক একমত হন। দলের বিভিন্ন স্তরে কর্মক্ষমতা পর্যালোচনা করে, কাজের ভিত্তিতে বদল আনার কথা বলেন অভিষেক। তিনি স্পষ্ট করে জানান, এই রদবদল আসন্ন এবং এটি দল ও প্রশাসনের কার্যকারিতা আরও উন্নত করবে। দলের অন্দরে অনেকদিন ধরে যে অসন্তোষ ও জটিলতা ছিল, তা কাটিয়ে উঠতে এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সংগঠনের পাশাপাশি মন্ত্রিসভার কার্যকলাপও এই আলোচনায় উঠে আসে। মমতা বৈঠকের পরদিন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যে পর্যালোচনা বৈঠক করেন, তাতে এই আলোচনার প্রতিফলন স্পষ্ট হয়। বৈঠকের ফলাফল অনুযায়ী, আগামী দশ দিনের মধ্যেই রদবদল কার্যকর করা হতে পারে।

প্রধান প্রকল্প এবং ভোটের কৌশল

আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন রাজ্যব্যাপী আবাস প্রকল্পে। এই প্রকল্পে স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর তিনি জোর দিয়েছেন। সরকারের ভাঁড়ার থেকে বড় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে, এবং এর মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা পাঠানোই তৃণমূলের লক্ষ্য।

দল ও প্রশাসনের মধ্যে কীভাবে সমন্বয় করে কাজ করা হবে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। বিশেষ করে, এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং সফল বাস্তবায়ন ভোটের বাক্সে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়েই কৌশল তৈরি হয়েছে।

শৃঙ্খলার বার্তা এবং দলীয় ঐক্য

মমতা এবং অভিষেক দুইজনেই সংগঠনের শৃঙ্খলার ওপর গুরুত্ব দেন। দলের অভ্যন্তরীণ জটিলতা কাটাতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষপাতী তাঁরা। এ নিয়ে দলের অন্দরেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এক নেতার ভাষায়, “আমে-দুধে মিশছে।”

দল ও প্রশাসনের এই সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে তৃণমূল নেতৃত্ব ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে আরও দৃঢ় করার পরিকল্পনা করছে। নতুন বছরে দলের এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক মহল ইতিবাচকভাবে দেখছে।

তৃণমূলের এই পদক্ষেপ কি আগামী নির্বাচনে দলকে বাড়তি সুবিধা এনে দেবে? দলীয় নেতৃত্ব আশাবাদী যে, এই রদবদল এবং কৌশলগত পরিবর্তন দলকে নতুন দিশা দেখাবে।

‘একজনের পক্ষে অসম্ভব’! আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবার এবং আসামিপক্ষ একই সুরে প্রশ্ন তুলল আদালতে

Read more

Local News