Tuesday, February 25, 2025

চিনের হুঁশিয়ারি উড়িয়ে তাইওয়ান প্রণালীতে আমেরিকার রণতরী! উত্তেজনা তুঙ্গে

Share

চিনের হুঁশিয়ারি উড়িয়ে তাইওয়ান প্রণালীতে!

বেজিংয়ের সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য করে তাইওয়ান প্রণালীতে আমেরিকার দুটি যুদ্ধজাহাজ প্রবেশ করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই প্রথমবার মার্কিন রণতরী সরাসরি এই বিতর্কিত জলসীমায় টহল দিল। চিন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, এই পদক্ষেপ নতুন করে উত্তেজনা বাড়াবে।


তাইওয়ান প্রণালীতে ট্রাম্পের শক্তি প্রদর্শন

নির্বাচনের আগেই ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি তাইওয়ানকে রক্ষা করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ নেবেন। দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে প্রবেশের তিন সপ্তাহের মধ্যেই সেই প্রতিশ্রুতি রূপায়িত করলেন তিনি। মঙ্গলবার মার্কিন সপ্তম নৌবহরের দুটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করে, যা বেজিংয়ের কড়া নজরে ছিল।

পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ ‘রুটিন প্রক্রিয়া’ এবং আন্তর্জাতিক জলসীমার নিয়ম মেনে করা হয়েছে। তবে চিনের মতে, এটি একেবারেই উসকানিমূলক এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।


কোন কোন যুদ্ধজাহাজ প্রবেশ করেছে?

তাইওয়ান প্রণালীতে যে দুটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ প্রবেশ করেছে, সেগুলি হল:

🔹 ইউএসএস রালফ জনসন – আর্লে বার্ক শ্রেণির গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডেস্ট্রয়ার।
🔹 ইউএসএনএস বাউডিচ – পাথফাইন্ডার শ্রেণির সমীক্ষক জাহাজ।

এগুলি উত্তর থেকে দক্ষিণ অভিমুখে প্রণালী পার হয়েছে এবং সরাসরি তাইওয়ানের আঞ্চলিক জলসীমার খুব কাছাকাছি এসেছে। যদিও স্থায়ীভাবে এই অঞ্চলেই মোতায়েন করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী।


চিনের হুঁশিয়ারি ও প্রতিক্রিয়া

চিন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজের অংশ বলে দাবি করে এসেছে এবং তাইওয়ানের প্রতি যে কোনো সামরিক সহায়তা বা উপস্থিতিকে তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখে।

বেইজিংয়ের বক্তব্য:

🛑 “আমেরিকার এই পদক্ষেপ সরাসরি আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াবে।”
🛑 “আমাদের সামরিক বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে এবং প্রয়োজনে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।”

চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ করছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


তাইওয়ান সংকট: অতীতের উত্তেজনা

এটি প্রথমবার নয়, যখন মার্কিন যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করল।

২০২২ সালের অগস্ট: ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর চিন ক্ষুব্ধ হয়ে ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে।
২০২৩ সালে: চিনা যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ বারবার তাইওয়ানকে ঘিরে মহড়া দেয়।
২০২৪ সালের জানুয়ারি: তাইওয়ানের সাধারণ নির্বাচনে চিন-বিরোধী দল ডিপিপি (Democratic Progressive Party) জিতে গেলে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।

চিনের দাবি, তাইওয়ান তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমেরিকার এই হস্তক্ষেপ তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিতে উৎসাহ দিচ্ছে।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ

🌍 জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া: মার্কিন পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে এবং চিনের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে।
🌍 ইউরোপীয় ইউনিয়ন: উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
🌍 রাশিয়া: চিনের পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকার “উসকানিমূলক” কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তাইওয়ান নিয়ে মার্কিন-চিন সংঘাত আরও গভীর হতে পারে, যা আগামী দিনে বড় ধরনের সামরিক উত্তেজনার দিকে এগিয়ে যেতে পারে।


ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশল ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

ট্রাম্প বরাবরই চিনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং তাইওয়ানকে শক্তিশালী সামরিক সহায়তা দেওয়ার পক্ষে ছিলেন।

🔹 আগামী দিনে আমেরিকা আরও সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে পারে।
🔹 তাইওয়ানকে আরও উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে।
🔹 চিন যদি পাল্টা পদক্ষেপ নেয়, তবে সামরিক সংঘাতও শুরু হতে পারে।


শেষ কথা

তাইওয়ান ইস্যুতে আমেরিকা-চিন সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প প্রশাসন তাইওয়ানকে সরাসরি সামরিক সমর্থন দিয়ে চিনকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে।

এখন দেখার বিষয়, চিন এই ঘটনার জবাবে কী পদক্ষেপ নেয়? তারা কি শুধু কড়া বিবৃতি দিয়ে ক্ষান্ত থাকবে, নাকি সামরিক শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যাবে? উত্তেজনা বাড়ছে, পরিস্থিতি নজরে রাখার প্রয়োজন!

“রাজ্যের বাজেট দিশাহীন!”— এক সুরে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু, নওশাদ ও বাম-কংগ্রেস

Read more

Local News