ওয়াকফ মামলায় কড়া অবস্থান সুপ্রিম কোর্টের!
ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতি উত্তাল। এই বিতর্কের মাঝেই সুপ্রিম কোর্ট দিল এক স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা—পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনও পরিবর্তন আনা যাবে না এবং বোর্ড বা পর্ষদে কোনও নতুন নিয়োগও চলবে না।
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিলের শুনানিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয়। মামলাটি শুনছিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এই মামলায় ইতিমধ্যেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ৭২টিরও বেশি পিটিশন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা, সাংসদ থেকে শুরু করে মুসলিম সংগঠনগুলিও।
কেন্দ্রকে সতর্ক বার্তা
সুপ্রিম কোর্টের কাছে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, বহু সম্পত্তি ওয়াকফ হিসাবে চিহ্নিত হলেও, সেগুলিকে নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্র আদালতের কাছে কিছুটা সময় চায় বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য। আদালত কেন্দ্রকে তার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেয়। পাশাপাশি জানিয়ে দেয়, এই সময়ের মধ্যে ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনও রকম পরিবর্তন চলবে না।
ওয়াকফ বোর্ডেও নিয়োগ স্থগিত
শুধু সম্পত্তি নয়, আদালতের কড়া নির্দেশ—ওয়াকফ বোর্ড ও পর্ষদেও কোনও নতুন নিয়োগ করা যাবে না আগামী শুনানি পর্যন্ত। এর ফলে বোর্ডের সাংগঠনিক কার্যক্রমেও আপাতত স্থবিরতা আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৫ মে।
হিংসা নিয়ে উদ্বেগ
নতুন ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে বাংলার মুর্শিদাবাদে, অশান্তি দেখা দেয়। যদিও শুনানিতে ওই ঘটনার নাম করে কিছু বলা হয়নি, তবে প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে বলেন, “হিংসা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টি যখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তখন রাস্তায় সহিংসতা কাম্য নয়।”
নিয়োগে ধর্মীয় বিভাজন প্রশ্নের মুখে
নতুন আইনে বলা হয়েছিল, ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমরাও সদস্য হতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে আদালত প্রশ্ন তোলে, “হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্ট বা বোর্ডে কি মুসলিমদের সদস্য করা হয়?”—এই মন্তব্য আইনের ধর্মনিরপেক্ষতা ও সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
তিনটি বিকল্প পথের কথাও বলল আদালত
বিচারপতি খন্না এদিন বলেন, “আমাদের সামনে তিনটি পথ—এক, আমরা শুনানি চালাব; দুই, হাই কোর্টে পাঠাব; তিন, হাই কোর্টে চলা মামলাগুলোকেও একত্রিত করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।” তবে আপাতত সুপ্রিম কোর্টই শুনানি চালিয়ে যাচ্ছে।
শেষ কথা
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বার্তা, ওয়াকফ সম্পত্তির মতো সংবেদনশীল বিষয়ে কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া চলবে না। আইনটির ভালো-মন্দ বিচার চলছে, কিন্তু ততদিন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে—এটাই আদালতের নির্দেশ। এখন দেখার, ৫ মে-র পরবর্তী শুনানিতে কী নির্দেশ আসে এবং আইনটির ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোয়।
জয়ী সিংহ ফতেহ্সিন! ৮ বছরের অপেক্ষার পর বাবা হলেন জাহির খান, খুশির হাওয়া লখনউ শিবিরে