Friday, April 11, 2025

অনিয়মিত ঋতুচক্র মানেই ভয় নয়—ঠিক সময়ে যত্ন নিলেই মুক্তি সম্ভব!

Share

অনিয়মিত ঋতুচক্র মানেই ভয় নয়!

বর্তমান সময়ে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বহু মহিলাই নিয়মিত ঋতুচক্রের সমস্যায় ভুগছেন। কারও মাসিক এক মাস হচ্ছে না, তো কারও আবার অস্বাভাবিক রক্তপাত হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে শারীরিক অস্বস্তি, মানসিক চাপ, এমনকি সন্তানধারণে সমস্যা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই অনিয়ম কি কোনও বড় বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

এই নিয়েই কথা বললেন এইচপি ঘোষ হাসপাতালের অভিজ্ঞ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক চিকিৎসক সুধীর অধিকারী। আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় তিনি জানালেন, বেশিরভাগ সময়েই এই অনিয়মের পেছনে কাজ করে হরমোনের গড়মিল, অনিয়মিত জীবনধারা, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত বা অতি কম ওজন এবং সবচেয়ে বড় কারণ—পিসিওডি (Polycystic Ovarian Disease)


পিসিওডি কি ভয়ানক?

অনেকেই “পিসিওডি” শব্দ শুনলেই ঘাবড়ে যান। চিকিৎসক সুধীর অধিকারীর কথায়, “এটা ভয় পাওয়ার মতো কিছু নয়। এটা এখন অনেক মেয়ের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। ওভারিতে একধরনের ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়, ওভারি স্বাভাবিকের থেকে বড় হয়ে যায়, এবং এর ফলে ঋতুচক্রে অনিয়ম দেখা দেয়। তবে সচেতনতা ও নিয়মিত চিকিৎসায় এই সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় দেখা যায়, রোগীরা পেটে তীব্র যন্ত্রণা বা অতিরিক্ত রক্তপাতের অভিযোগ নিয়ে আসছেন। সে ক্ষেত্রে ব্যথার ওষুধ বা হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।”


ভয় নয়, বুঝে শুনে ব্যবস্থা নিন

সুধীরবাবু জানান, “অনেক মেয়েই ঋতুচক্রে একটু অনিয়ম হলেই ধরে নেন, তাঁরা ভবিষ্যতে মা হতে পারবেন না। এটা একেবারে ভুল ধারণা। ঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে, নিয়ম মেনে চললে এবং জীবনধারায় পরিবর্তন আনলে ভবিষ্যতের সন্তানধারণেও কোনও সমস্যা হয় না।”

সাধারণত পিসিওডি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেসব দিকগুলোর ওপর বিশেষভাবে নজর দিতে বলেন তিনি:

  • সুস্থ ও সুষম খাদ্যাভ্যাস
  • নিয়মিত শরীরচর্চা
  • মানসিক চাপ কমানো
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • নিয়মিত ঘুম ও বিশ্রাম
  • চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ

কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি?

যদি মাসিক এক মাস বা তার বেশি বন্ধ থাকে, রক্তপাত অত্যধিক হয়, অথবা পেটে অসহ্য ব্যথা থাকে, তাহলে দেরি না করে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও, যাঁরা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের সময়মতো স্ক্যান ও হরমোনাল পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভালো।


শেষ কথা

অনিয়মিত ঋতুচক্র অনেক সময়েই একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা, যেটা ঠিক সময়ে বুঝে, প্রয়োজনমতো চিকিৎসা নিলে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। ভয় পাওয়ার কিছুই নেই, বরং শরীরের পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে সচেতন হওয়াটাই সবচেয়ে বড় দাওয়াই। মনে রাখবেন, আপনার শরীর আপনার সম্পদ—তাকে সময় দিন, যত্ন নিন।

ট্রাম্পের ‘পাল্টা শুল্ক’ ঘোষণার অপেক্ষায় বিশ্ব, ভারতের চিন্তা বাড়ছে!

Read more

Local News