Thursday, February 20, 2025

নদিয়ার বাংলাদেশ সীমান্তে মাটি খুঁড়ে মিলল জোড়া বাঙ্কার! ২ বিঘা জমি ঘিরে রেখে তদন্তে বিএসএফ

Share

নদিয়ার বাংলাদেশ সীমান্তে মাটি খুঁড়ে মিলল জোড়া বাঙ্কার

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া সুধারঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের কাছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সীমান্ত এলাকা লাগোয়া একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি খুঁড়ে বিএসএফ উদ্ধার করেছে দু’টি লোহার বাঙ্কার। এই বাঙ্কারগুলো থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। ঘটনাটি নিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, কারণ বাঙ্কারের ভেতরে বিস্ফোরক থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা।

বাঙ্কার থেকে উদ্ধার নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জমিটি তল্লাশি শুরু করেন। শুক্রবার প্রথমে একটি বাঙ্কার পাওয়া যায়। পরবর্তীতে আরও দুটি বাঙ্কার শনাক্ত করা হয়। এই বাঙ্কারগুলো খুলে দেখা যায়, সেখানে কয়েক হাজার বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ লুকিয়ে রাখা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই সিরাপগুলো বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে লুকানো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকার কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়েছে।

বাঙ্কারের আকার ও জমির মালিকের রহস্যজনক অনুপস্থিতি
উদ্ধারকৃত বাঙ্কারগুলোর মধ্যে প্রথমটি ছিল প্রায় ১০ ফুট চওড়া, ১৫ ফুট লম্বা এবং ৮ ফুট উচ্চতার। অন্য দুটি বাঙ্কার তুলনামূলক ছোট। জমির মালিকের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। শুক্রবার থেকে তিনি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ রয়েছেন। বিএসএফ জমিটি ঘিরে রেখেছে এবং তল্লাশি চালাচ্ছে।

সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা
গণতন্ত্র দিবসকে সামনে রেখে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ইতিমধ্যেই ‘অপস অ্যালার্ট’ জারি করেছে বিএসএফ। উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকাগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। এর মধ্যেই এই বাঙ্কার উদ্ধারের ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিএসএফ মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করে বিস্ফোরক অনুসন্ধান করছে।

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ উদ্যোগ
এখনও পর্যন্ত বিএসএফ এবং স্থানীয় পুলিশ একযোগে কাজ চালাচ্ছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, উদ্ধারকৃত সিরাপ পাচারের উদ্দেশ্যে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। বিএসএফের ৩২ ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ড্যান্ট সুজিত কুমার জানিয়েছেন, তল্লাশি এখনো চলছে এবং আরও কিছু নিষিদ্ধ দ্রব্য উদ্ধার হতে পারে।

সীমান্তে পাচার রোধে পদক্ষেপ
সীমান্ত এলাকাগুলিতে কড়া প্রহরায় থাকার পরও পাচারকারীরা নানা কৌশলে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাঙ্কার উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি কৌতূহলও দেখা দিয়েছে। ঘটনাস্থলে ভিড় জমতে শুরু করলেও বিএসএফ পুরো এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

এই ঘটনা একদিকে যেমন সীমান্ত এলাকায় পাচার রোধে বিএসএফের কঠোর পদক্ষেপের নজির হয়ে থাকবে, অন্যদিকে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তার চিত্র কতটা নড়বড়ে, তা-ও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে।

আইএসএলে প্লে-অফের স্বপ্ন ভঙ্গ, ইস্টবেঙ্গল কোচের দুঃখপ্রকাশ

Read more

Local News