Saturday, February 22, 2025

আমেরিকায় দুষ্কৃতী হানায় মৃত বেড়ে ১৫! ঘাতক প্রাক্তন সেনাকর্মীর গাড়িতে মিলল আইএসের পতাকা

Share

আমেরিকায় দুষ্কৃতী হানায় মৃত বেড়ে ১৫!

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স শহরে নতুন বছরের প্রথম দিনেই ঘটে ভয়াবহ দুষ্কৃতী হামলা। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫। আহত অন্তত ৩০ জন, এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঘাতক শামসুদ-দিন জব্বর নামক এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর এই হামলা গোটা আমেরিকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে।

হামলার বিবরণ

নিউ অরলিন্স শহরের জনবহুল এলাকায় ভিড়ের মধ্যে একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে চালিয়ে বহু মানুষকে পিষ্ট করেন জব্বর। পুলিশকে লক্ষ্য করেও গুলি চালান তিনি। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন হামলাকারী। তার গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর পতাকা, বন্দুক, এবং বিস্ফোরক।

আমেরিকায়

সন্ত্রাসবাদী যোগসাজশ

আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা ফেডেরাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) জানিয়েছে, হামলাকারী জব্বর প্রাক্তন সেনাকর্মী। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি নিয়মিত সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে কাজ করেন।

ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আইএসের পতাকা এবং জব্বরের গাড়িতে থাকা অন্যান্য প্রমাণ থেকে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, এই হামলার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএসের যোগ রয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে এটি একক হামলা মনে হলেও, এফবিআই মনে করছে এই পরিকল্পনার পেছনে আরও কয়েকজনের হাত রয়েছে। বর্তমানে জব্বরের সঙ্গীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আততায়ীর পোস্ট ও পরিকল্পনা

হামলার আগে জব্বর একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি দাবি করেন যে তিনি আইএসের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায় যে, তিনি বিবাহবিচ্ছেদ চান এবং পরিবারের সকলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে পরে তিনি এই পরিকল্পনা বদলে হামলার সিদ্ধান্ত নেন।

এফবিআই এই ভিডিওটি উদ্ধার করেছে এবং এর সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। তবে ভিডিওটির সত্যতা এখনও যাচাই করা হয়নি।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, “এই ঘটনা সন্ত্রাসবাদ ও হিংসার আরেকটি উদাহরণ, যা সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তা নষ্ট করছে। আমরা এই ধরনের হামলাকে কখনোই বরদাস্ত করব না।”

প্রেক্ষাপট

নিউ অরলিন্স শহর, যা এর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত, এ ধরনের হামলায় স্তম্ভিত। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি শুধুমাত্র একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা নয়, এটি মানুষের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।

আইএস-এর প্রভাব

বিশ্বজুড়ে আইএসের কার্যকলাপের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশেষত, একক সন্ত্রাসী বা ‘লোন উলফ’ হামলাকারীদের ব্যবহার করে আইএসের কার্যক্রম পরিচালনার কৌশল সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বাড়ছে। জব্বরের মতো প্রাক্তন সেনাসদস্যের এমন কার্যকলাপ আরও উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ তারা অস্ত্র চালনায় দক্ষ এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর।

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

এফবিআই ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা এখন জব্বরের অতীত, তার আইএস-যোগ এবং এই হামলার পরিকল্পনার পেছনে থাকা আরও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে তা জানাতে বলেছে।

উপসংহার

নিউ অরলিন্সের এই হামলা কেবল আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ও তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। আইএস-এর পতাকা পাওয়া ও ঘাতকের প্রাক্তন সেনাকর্মী হওয়ার বিষয়টি আরও জটিলতা সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী আরও সতর্কতা ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করে দিয়েছে।

‘ইচ্ছে ছিল মধ্যরাতে মেয়ের ছবি দেব’, কৃষভিকে প্রকাশ্যে আনলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী

Read more

Local News