Saturday, December 6, 2025

কৃষক আন্দোলন ঘিরে মন্তব্যের জেরে ফের আইনি জটিলতায় কঙ্গনা! আদালতের নতুন সমন কী ইঙ্গিত দিচ্ছে?

Share

কৃষক আন্দোলন ঘিরে মন্তব্যের জেরে ফের আইনি জটিলতায় কঙ্গনা!

২০২০-২১ সালে দিল্লির সীমান্তে কৃষক আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন দেশজুড়ে নানা বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী তথা বর্তমান সাংসদ কঙ্গনা রনৌত। বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের বহু কৃষক কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করেছিলেন। সেই সময়ে এক আন্দোলনকারী প্রবীণ মহিলাকে নিয়ে কঙ্গনার মন্তব্য মারাত্মক সমালোচনার জন্ম দেয়। তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলাতেই ফের আইনি জটিলতায় পড়লেন অভিনেত্রী।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে যখন আন্দোলনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কঙ্গনা একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করেন, ছবির মহিলাটি নাকি শাহিনবাগ আন্দোলনের প্রবীণ প্রতিবাদী বিলকিস বানো। শুধু তাই নয়, কঙ্গনার মন্তব্য অনুযায়ী, এরকম মানুষকে নাকি সামান্য অর্থের বিনিময়ে আন্দোলনে নিয়ে যাওয়া যায়। এই মন্তব্যকে অপমানজনক এবং মানহানিকর বলে দাবি করেন ৭৩ বছরের কৃষক আন্দোলনকারী মহিন্দর কৌর। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই কঙ্গনার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়।

বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল পঞ্জাবের ভটিন্ডা জেলার আদালতে। কিন্তু কঙ্গনা হাজির হননি। তিনি আদালতকে জানান, সেদিন লোকসভায় তাঁকে উপস্থিত থাকতে হয়েছিল। সরকারি কর্মব্যস্ততার কারণে আদালতের নির্দেশ মানা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। সেই যুক্তি আদালতে জমা পড়লেও বিচারক ইন্দ্রজিৎ সিংহ স্পষ্ট নির্দেশ দেন— আগামী ১৫ ডিসেম্বর কঙ্গনাকে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে উপস্থিত হতেই হবে।

কঙ্গনার অনুপস্থিতির মধ্যেই এ দিন আদালতে নিজের বয়ান দেন অভিযোগকারী মহিন্দর কৌর। হুইলচেয়ারে করে তিনি আদালতে আসেন। তাঁর বয়ান রেকর্ড হওয়ার পর থেকেই মামলাটি নতুন দিক নেয়। আইনজীবীদের মতে, অভিযোগকারীর বয়ানের পরে এখন কঙ্গনার পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাঁকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে।

কঙ্গনা বর্তমানে হিমাচলপ্রদেশের মান্ডি কেন্দ্রের সাংসদ। নির্বাচনের সময় তিনি জানিয়েছিলেন, জনসেবার জন্যই রাজনীতিতে এসেছেন। তবে ভোটের পরপরই কয়েকটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, রাজনীতি তাঁর কল্পনার মতো নয়। রাজনৈতিক পরিবেশ তাঁকে মানসিকভাবে চাপে ফেলছে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।

অন্যদিকে, কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে বলিউড সম্পর্কিত নানা মন্তব্য— কঙ্গনা প্রায়ই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর মন্তব্য বহুবার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিন্তু এবার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ানোয় পরিস্থিতি আরও গুরুতর।

মানহানির মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে সাধারণত নিজের মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে হয় বা সেই বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হয়। তবে কঙ্গনা এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। শুধু আদালতে হাজির হতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। ১৫ ডিসেম্বর আদালতে তাঁর ব্যক্তিগত হাজিরা মামলার গতিপথ অনেকটাই নির্ধারণ করবে বলে মনে করছেন আইনি বিশেষজ্ঞেরা।

একাধিক বিতর্ক সামলে বলিউড ও রাজনীতিতে সক্রিয় কঙ্গনার বিরুদ্ধে এই মামলা তাঁর জনমুখী ভাবমূর্তিতে কিছুটা চাপ তৈরি করতে পারে। তবে আদালতের নির্দেশ মেনে হাজির হলে এবং নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করলে পরিস্থিতি কতটা বদলাবে, তা এখন সময়ই বলবে।

Read more

Local News