Tuesday, December 2, 2025

নথি যাচাইয়ে নতুন ধাক্কা! আরও ৩০১ জন প্রার্থীর নাম বাতিল করল এসএসসি—কোথায় ধরা পড়ল ভুল?

Share

নথি যাচাইয়ে নতুন ধাক্কা!

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নথি যাচাই চলতে চলতেই ফের বড়সড় বাদ পড়ার ঘটনা সামনে এল। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) সোমবার গভীর রাতে জানায়, নথি যাচাইয়ের বিভিন্ন ধাপে অসামঞ্জস্য ধরা পড়ায় আরও ৩০১ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম বাতিল করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা ফেরানোর উদ্দেশ্যেই এই কঠোর সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে কমিশন।

🔹 ১৮ নভেম্বর শুরু হওয়া নথি যাচাই—৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে

গত ১৮ নভেম্বর থেকে পার্সোনালিটি টেস্ট-সংক্রান্ত নথি যাচাই চলেছে। প্রার্থীদের একাডেমিক যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত সব নথিই এখানে খতিয়ে দেখছেন কমিশনের আধিকারিকেরা। প্রথম দফায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে বাদ পড়েছিল ১০৬ জন। দ্বিতীয় দফায় আরও ৩০১ জনের নাম বাতিল হওয়ায় উত্তাল চাকরিপ্রার্থী মহল।

🔹 কোন কোন বিষয়ের প্রার্থীরা বাদ পড়লেন?

এসএসসি-র প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে বাদ পড়া প্রার্থীর সংখ্যা—

  • বাংলা : ৩৩ জন
  • ইংরেজি : ৭৩ জন
  • বাণিজ্য : ৬৩ জন
  • রাষ্ট্রবিজ্ঞান : ১২৪ জন
  • কম্পিউটার সায়েন্স : ৩৩ জন
  • ইতিহাস : ৮১ জন

এই হিসেবেই মোট ৩০১ জনের নাম বাতিল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

🔹 কেন বাদ গেলেন এই প্রার্থীরা?

এসএসসি সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি কারণেই বাদ পড়েছেন অনেকে—

১. শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ভুল তথ্য

অনেক প্রার্থী ওয়েবসাইটে যে অভিজ্ঞতার শংসাপত্র আপলোড করেছিলেন তা যাচাই করে দেখা যায়—

  • নথিতে ভুল তথ্য রয়েছে
  • প্রতিষ্ঠান-স্বীকৃতি নিয়ে অস্পষ্টতা ছিল
  • অভিজ্ঞতার বছর ও কার্যকাল মিলছিল না

ফলে, প্রাথমিকভাবে যে ১০ নম্বর অভিজ্ঞতার জন্য দেওয়া হয়েছিল তা কেটে নেওয়া হয়। অনেকের নম্বর কাট অফের নিচে নেমে গিয়েছে, তাই তাঁরা বাতিল বলে গণ্য হয়েছেন।

২. নথি যাচাইয়ে অনুপস্থিতি

কয়েকজন প্রার্থী সরাসরি নথি যাচাইয়ে হাজির হননি। পূর্বনির্ধারিত সময়ে উপস্থিত না থাকার কারণে তাঁদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।

৩. শংসাপত্র সামঞ্জস্যহীনতা

একাডেমিক শংসাপত্র, প্রশিক্ষণ সনদ বা জন্মতারিখ সংক্রান্ত নথি—কোনও কোনও ক্ষেত্রে মিল ছিল না আপলোড করা তথ্যের সঙ্গে।

🔹 দাগি প্রার্থীদের নতুন করে চিহ্নিতকরণ

এসএসসি জানিয়েছে, এই পর্বে ২৬৯ জন দাগি বা অযোগ্য প্রার্থীও ধরা পড়েছেন।
অর্থাৎ—

  • যাঁরা অতীতের অনিয়মে যুক্ত ছিলেন,
  • অথবা কোনও কারণে ‘অযোগ্য’ তালিকায় রয়েছেন,
    তাঁদের অনেকেই আবার নতুন করে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন।

যাচাইয়ের সময় তাঁদের নাম চিহ্নিত করা হয়েছে এবং অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

🔹 আরও বাদ পড়ার সম্ভাবনা আছে কি?

নথি যাচাই এখনও চলছে। ৪ ডিসেম্বর এই প্রক্রিয়া শেষ হবে। ফলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে,

  • আরও কিছু নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

🔹 প্রার্থীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা

ক্রমাগত বাদ পড়ার তালিকা বাড়তেই উদ্বেগে চাকরি-প্রার্থীরা। বহু মানুষের অভিযোগ, নথি যাচাই প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠোর, আবার কারও মতে এটি স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরি।

Read more

Local News