Monday, December 1, 2025

ভোটার তালিকা সংশোধনে অতিরিক্ত সময়: বদলে গেল খসড়া ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিন

Share

বদলে গেল খসড়া ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিন!

পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বারোটি রাজ্য এবং একাধিক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চলমান ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। এর ফলে পিছিয়ে গেল খসড়া ভোটার তালিকা এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের তারিখও। রবিবার জারি করা কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সময়সীমা ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর থেকেই এই রাজ্যগুলিতে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং প্রাথমিক সূচী অনুযায়ী ৪ ডিসেম্বরের মধ্যেই এনুমারেশন ফর্ম ওয়েবসাইটে আপলোডের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৯ ডিসেম্বর প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল খসড়া তালিকা, আর ৭ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা। তবে নতুন নির্দেশে গোটা প্রক্রিয়াই এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হল।

কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এখন এনুমারেশন ফর্ম জমা নেওয়া এবং তা নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করার কাজ শেষ করতে হবে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে। একই সঙ্গে বুথ ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক কাজও ওই সময়ের মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে। ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে খসড়া তালিকা তৈরির প্রস্তুতি, যা চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হবে খসড়া ভোটার তালিকা।

খসড়া তালিকা প্রকাশের পর শুরু হবে আপত্তি ও দাবি জানানোর সময়সীমা। ভোটাররা তাঁদের নাম, বয়স, ঠিকানা বা অন্য কোনও তথ্য নিয়ে সমস্যা থাকলে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন। এই সমস্ত আপত্তি ও দাবি নিষ্পত্তির দায়িত্ব থাকবে ইআরও বা ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের উপর। ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁরা শুনানি, তথ্য যাচাই, সন্দেহ নিরসন এবং প্রয়োজন হলে সংশোধনের কাজ করবেন।

পরে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে। অনুমতি পাওয়া গেলে ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।

এই মুহূর্তে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, কেরল, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লক্ষদ্বীপ, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরী, রাজস্থান, তামিলনাড়ু এবং উত্তরপ্রদেশেও চলছে এই বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়া। প্রতিটি বুথে নিয়োজিত বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিতরণ করেছেন এবং পরে তা সংগ্রহ করেছেন। এই কাজে তাঁদের পাশে ছিলেন দলের বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএ-রা। ফর্ম সংগ্রহের পর তথ্যগুলি পোর্টালে আপলোড করার দায়িত্ব বিএলও-দের উপরই। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই প্রস্তুত হবে খসড়া তালিকা।

প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, এনুমারেশন প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের বিএলও-রা যে অভিযোগ তুলেছিলেন—বিশেষ করে অতিরিক্ত কাজের চাপ, মানসিক ক্লান্তি, প্রযুক্তিগত সমস্যা, এবং কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক অসুস্থতার ঘটনা—এসব বিবেচনা করেই কমিশন সময়সীমা বাড়িয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিএলও-দের অতিরিক্ত কাজের চাপ সামলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল; কোথাও কোথাও আত্মহত্যার ঘটনাও চাঞ্চল্য তৈরি করে।

যদিও কমিশন সময় পিছোনোর নির্দিষ্ট কারণ জানায়নি, পর্যবেক্ষকদের মতে, মাঠপর্যায়ের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত।

Read more

Local News