মামদানির রং-অনুসরণে নতুন জল্পনায় ট্রাম্প!
অস্বাভাবিক হলেও সত্যি—ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে সাম্প্রতিকতম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এবার তাঁর ফ্যাশন সেন্স! রাজনৈতিক ভাষ্য, তীক্ষ্ণ মন্তব্য বা বিতর্কে তাঁকে নিয়ে শোরগোল নতুন নয়। কিন্তু এই প্রথম প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ঘিরে আলোচনা তৈরি হয়েছে তাঁর পোশাক নির্বাচনের জন্য। আর এই আলোচনার সূত্রপাত নিউ ইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে ঘিরে।
এক সময় এই মামদানিই ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। পরে অবশ্য দু’জনকে একই ফ্রেমে ধরা পড়তে দেখা গেলে সমাজমাধ্যমে তার যথেষ্ট সাড়া জাগে। সেখান থেকেই জল্পনার শুরু—ট্রাম্প কি তবে সম্পর্ক মেরামত করতে চাইছেন? নাকি কোনো রাজনৈতিক হিসেব? এই প্রশ্নগুলোর মাঝেই আবার ট্রাম্পকে দেখা গেল এমন একটি শীতের পোশাকে, যা এক বছর আগে মামদানির পরা এক প্রচার-অভিযান পোশাকের সঙ্গে প্রায় পুরোপুরি মিলে যায়।
🔸 যে পোশাক নিয়ে শুরু বিস্তর আলোচনা
সাম্প্রতিক একটি ভিডিওতে ট্রাম্পকে দেখা যায় গায়ে কালো ওভারকোট এবং ভিতরে লালচে-মেরুন টার্টলনেক সোয়েটার পরা অবস্থায়। ঠিক এই একই রঙের টার্টলনেক পরে, একই রঙের ব্লেজারের সঙ্গে, মামদানিকে দেখা গিয়েছিল বাইডেন-বিরোধী এক প্রচার কর্মসূচিতে।
দু’জনের মধ্যে পার্থক্য শুধু—
- ট্রাম্প পরেছেন ওভারকোট,
- মামদানি পরেছিলেন ব্লেজার।
কিন্তু রং?
সম্পূর্ণই এক!
এতেই শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা—
ট্রাম্প কি তবে মামদানির ফ্যাশন অনুসরণ করছেন? না কি এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক বার্তা?
🔸 ফ্যাশন তো অজুহাত, আসল লক্ষ অন্য?
অনেকে বলছেন, ট্রাম্প ইচ্ছাকৃতভাবেই ওই পোশাক বেছে নিয়েছেন। কেন?
কারণ মামদানি এই পোশাক পরেছিলেন জো বাইডেনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে—যিনি ট্রাম্পের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে ‘শত্রুর শত্রুই বন্ধু’—এই সমীকরণ ধরেই ট্রাম্প হয়তো মামদানির প্রতি নরম মনোভাব দেখাতে চাইছেন।
নেটিজেনদের মন্তব্য—
“মামদানির ভোটব্যাঙ্ক যাতে ভুল করে ডেমোক্র্যাটদের দিকে না যায়, তাই তাকে নিজের পাশে টানতে চাইছেন ট্রাম্প!”
আর যদি ফ্যাশন দিয়ে সম্পর্ক মজবুত করা যায়, তবে ট্রাম্প যে তা চেষ্টা করতেই পারেন—এমন মতও চলছে সমাজমাধ্যমে।
🔸 ফ্যাশনের রাজনৈতিক ব্যবহার—ইতিহাস পুরনো
বিশ্ব রাজনীতিতে পোশাক বহু বারই বার্তা বহন করেছে।
- কখনও রঙ দিয়ে দলের মতাদর্শ তুলে ধরা হয়,
- কখনও কোনো ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয় পোশাকের মাধ্যমেই,
- আবার কখনও করা হয় কৌশলগত ‘ইঙ্গিত’।
তাই অনেকে মনে করছেন—ট্রাম্পের পোশাক নির্বাচন নিছক কাকতালীয় নয়।
🔸 অন্য মতও ঘুরছে—এ কি ট্রাম্পের নতুন রঙের প্রতি আসক্তি?
বহু ব্যবহারকারী আবার সম্পূর্ণ ভিন্ন মত দিয়েছেন। তাঁরা দাবি করছেন,
“ট্রাম্প বরাবরই লালচে রঙ পছন্দ করেন। তাই হয়তো স্বাভাবিকভাবেই এই রঙটি বেছে নিয়েছেন।”
আরও মজার মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ—
“ট্রাম্প আসলে মামদানির ব্যক্তিত্বে ঘায়েল! তিনি হয়তো শক্তিশালী (অ্যালফা মেল) ব্যক্তিদের প্রতি একটু বেশি আকৃষ্ট।”
🔸 ওবামাও কি একই রঙে অনুপ্রাণিত?
এক দল নেটিজেন আবার বলছেন, বারাক ওবামাকেও আগেই একই রঙ মিলিয়ে সাজে দেখা গিয়েছিল—তবে তিনি টার্টলনেক নয়, বরং মেরুন স্কার্ফ বেছে নিয়েছিলেন।
🔶 শেষ কথা
ট্রাম্প কি সত্যিই মামদানির ফ্যাশন অনুকরণ করছেন?
নাকি এটি কোনো রাজনৈতিক ইশারা?
নাকি কেবলই রঙের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত আসক্তি?
উত্তর যা-ই হোক, স্পষ্ট একটাই—
ফ্যাশনকে কেন্দ্র করে নতুন রাজনৈতিক নাটক শুরু হয়ে গেছে আমেরিকায়, আর তার নায়ক—ডোনাল্ড ট্রাম্প!

