সুপার ওভারের déjà vu
উঠতিদের এশিয়া কাপ ক্রিকেটে নাটকীয়তার শেষ রেশটুকুও যেন সুপার ওভারেই লুকিয়ে ছিল। ভারতকে সুপার ওভারে হারিয়ে যে বাংলাদেশ রোমাঞ্চকর ভাবে ফাইনালে উঠেছিল, সেই একই সুপার ওভারই শেষমেশ তাদের চোখের সামনে থেকে ছিনিয়ে নিল স্বপ্নের এশিয়া কাপ। অপরাজিত থেকেই শিরোপা ঘরে তুলল পাকিস্তান।
ফাইনালের রোমাঞ্চ— ২০ ওভারে দু’দলই ১২৫, সিদ্ধান্ত সুপার ওভারে
ফাইনালের শুরু থেকেই স্পষ্ট ছিল— দু’দলের ব্যাটসম্যানরাই সংগ্রামে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান ২০ ওভারে ১২৫ রানে অল আউট হয়ে যায়। মনে হচ্ছিল, লক্ষ্য তাড়া করা কঠিন হবে না। কিন্তু সেই অনুমানকে ভুল প্রমাণ করে বাংলাদেশও ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৫ রানে থেমে গেল।
দু’পক্ষের লড়াই এতটাই টানটান ছিল যে স্বাভাবিক সময়েই ফল বেরোল না। ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে— আর সেখানেই ভাগ্য ফিরে দাঁড়াল পাকিস্তানের দিকে।
সুপার ওভারের হতাশা— তিন বলে শেষ বাংলাদেশ!
বাংলাদেশ টসে জিতে সুপার ওভারে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু প্রত্যাশার চরম বিপর্যয় ঘটে—
- সুপার ওভারের দ্বিতীয় বলেই আউট আব্দুল গফ্ফর সাকলাইন (০)
- তৃতীয় বলেই আউট জিশান আলম (০)
মোটে ৬ রান— মাত্র ৩ বলেই শেষ তাদের ইনিংস।
রিপন মণ্ডল বল করতে আসেন পাকিস্তানের হয়ে, কিন্তু স্কোরবোর্ডে রান কম থাকায় চাপ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। পাকিস্তান মাত্র ৪ বলেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়, কাপ ওঠে তাদের হাতেই।
পাকিস্তানের ইনিংস— ৭৫/৬ থেকে লড়াই দিয়ে ১২৫
পাকিস্তান ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে— ৭৫ রানে পড়ে যায় ৬ উইকেট।
সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান সাদ মাসুদ।
- ২৬ বলে ৩৮ রান
- ৩টি চার ও ৩টি ছক্কা
তাঁর সঙ্গে মাজ সাদাকাত (২৩) এবং আরাফাত মিনহাস (২৫) গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল রিপন মণ্ডল— ৩ উইকেট। রাকিবুল হাসান নেন ২ উইকেট।
বাংলাদেশের রানতাড়া— ৯৬/৯ থেকে লড়াই
১২৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের অবস্থাও একেবারে পাকিস্তানের মতোই—
দলীয় ৯৬ রানে পড়ে ৯ উইকেট।
কিন্তু এখানেই দেখা যায় দুই তরুণ ক্রিকটারের অসাধারণ জেদ—
- সাকলাইন ১৬*
- রিপন ১১*
দু’জনে মিলে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ২৯ রান, ম্যাচ ফেরত আনেন সুপার ওভারে।
কিন্তু সেই সুপার ওভারেই শেষ সব আশা।
অপরাজিত পাকিস্তান— প্রাপ্যই পেল?
পুরো টুর্নামেন্টেই দুরন্ত পাকিস্তান দল একটিও ম্যাচ হারেনি। টিম কম্বিনেশন, নিয়ন্ত্রিত বোলিং, চাপের সময়ে ঠান্ডা মাথা— সব মিলিয়ে ফাইনালে তার পুরস্কার হাতেনাতেই পেল তারা।
বাংলাদেশও টুর্নামেন্ট জুড়ে দুরন্ত লড়াই করেছে। ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ সুপার ওভার জয় ছিল টুর্নামেন্টের অন্যতম মুহূর্ত। কিন্তু ফাইনালে অভিজ্ঞতার কাছে হার মানল আগামী দিনের তারকারা।
শেষ কথা
ফাইনাল হারের কষ্ট থাকলেও বাংলাদেশ দলের লড়াই ভোলার নয়। দু’দলই দেখাল এশিয়ার উঠে আসা প্রজন্ম কতটা প্রতিভাবান। ভবিষ্যতের ক্রিকেট কী হতে চলেছে, তার স্পষ্ট আভাস মিলল এশিয়া কাপের এই রোমাঞ্চকর সংস্করণে।

