উজবেক ক্লাবের কাছে বড় হারে ইস্টবেঙ্গল নারী দল
এএফসি এশিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গলের মহিলা ফুটবল দল। রবিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে শুধু একটি ড্র পেলেই ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে লেখা হয়ে যেত নতুন অধ্যায়— মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতার শেষ আটে উঠত দেশের প্রথম কোনও ক্লাব। কিন্তু উজবেকিস্তানের শক্তিশালী পিএফসি নাসাফের সামনে সেই স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ হলেন শিলকি দেবীরা। ঘন ঘন আক্রমণ শানিয়েও শেষ পর্যন্ত ০-৩ গোলে পরাজিত হল লাল-হলুদ ব্রিগেড।
তবুও শেষ হয়নি লড়াই। গ্রুপ পর্বের দুই সেরা তৃতীয় স্থানপ্রাপ্ত দলও সুযোগ পাবে নকআউটে ওঠার। সেই তালিকায় নাম লেখানোর ক্ষীণ হলেও সম্ভাবনা রয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের।
ড্র করলেই ইতিহাস, কিন্তু লাল-হলুদের দিনটা হল না
গতবারের চ্যাম্পিয়ন উইহান জিয়াংদার কাছে হারলেও আগের ম্যাচগুলোয় ভালো লড়াই করে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল অ্যান্থনি অ্যান্ড্রেজের দল। রবিবার নাসাফের বিরুদ্ধে ড্র হলেই গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে সরাসরি শেষ আটে ওঠা যেত। কিন্তু প্রত্যাশার চাপ সামলাতে পারলেন না ফুটবলাররা।
ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য ছিল প্রতি আক্রমণে সুযোগ তৈরি করা। কিন্তু প্রথমার্ধেই প্রতিপক্ষের গতি, শারীরিক শক্তি আর মসৃণ পাসিংয়ের কাছে দুর্বল হয়ে পড়ে লাল-হলুদের রক্ষণ।
প্রথমার্ধেই নাসাফের দাপট— দুই গোলে এগিয়ে উজবেকিস্তানের দল
ম্যাচের ১৭ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ইস্টবেঙ্গলের একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রথম গোল করেন দিয়োরাখন খাবিবুলেভা।
২৫ মিনিটে ফের চাপ বাড়ায় নাসাফ— জারিনা মামাতকারিমোভার শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। কিন্তু এক মিনিটের মধ্যেই আবার পোস্ট কাঁপিয়ে দেন গুলজোদা আমিরোভা।
এই চাপ সামলাতে গিয়ে ছন্দ হারায় ইস্টবেঙ্গল।
প্রথমার্ধ শেষ হয় ০-১ ব্যবধানে নাসাফের পক্ষে, যদিও সেই স্কোরলাইন প্রতিপক্ষের আধিপত্য প্রতিফলিত করে না।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ইস্টবেঙ্গল
বিরতির পর পরিস্থিতি পালটানোর লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে লাল-হলুদ দল। কিন্তু ৫২ মিনিটেই আরেকবার রক্ষণভাগ ভেঙে যায়।
লুডমিলা কারাচিকার কর্নার থেকে উঠে আসা বল হেড করে জারিন নরবোএভা ব্যবধান বাড়িয়ে দেন— ০-২।
এত বড় ব্যবধান পেরোনোর চাপ সামলে উঠতে না উঠতেই ম্যাচের শেষ দিকে আরও একবার আঘাত হানে নাসাফ।
খাবিবুলেভা দ্বিতীয় গোল করে স্কোরলাইন করেন ০-৩— সেখান থেকেই কার্যত আশা শেষ হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের।
সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ শিলকি দেবীরা
ইস্টবেঙ্গল গোলের সামনে সুযোগ তৈরি করেছিল।
- ডানদিক দিয়ে কয়েকটি সুন্দর মুভ
- বক্সের ভেতরে কয়েকটি পাস
- দূরপাল্লার শট
সবই হয়েছিল, কিন্তু গোলmouth-এ শেষ মুহূর্তে ভুল, শট টার্গেটে না থাকা এবং নাসাফের গোলকিপারের দৃঢ়তায় কোনওটিই গোল হয়ে ওঠেনি।
তবুও জিইয়ে থাকল নকআউটের আশা
এই হারের পর গ্রুপ সেরা দুই তৃতীয় দলের একটি হয়ে শেষ আটে ওঠার সম্ভাবনা কিছুটা কমেছে ইস্টবেঙ্গলের।
এর জন্য দরকার গুরুত্বপূর্ণ একটি শর্ত—
গ্রুপের শেষ ম্যাচে ইরানের বাম খাতুন এফসিকে অন্তত তিন গোলের ব্যবধানে হারতে হবে চিনের উইহান জিয়াংদার কাছে।

