রঞ্জিতে জ্বলে উঠে নির্বাচকদের দৃষ্টি কাড়তে চাইছেন শামি!
রঞ্জি ট্রফির চার ম্যাচে ২০ উইকেট— পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, বাংলার জোরে বোলার মহম্মদ শামি এখনও যে দেশের সেরা পেসারদের মধ্যে অন্যতম, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বয়স বাড়লেও আগ্রাসন বা ধার কমেনি তাঁর বলের। শুক্রবার সিএবি ঘোষণা করেছে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির জন্য ১৭ জনের বাংলা দল, এবং তাতে স্বাভাবিক ভাবেই জায়গা পেয়েছেন ৩৫ বছরের শামি। কিন্তু ভারতীয় দলে অনুপস্থিতি— সে প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বড়।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্য শামিকে বিবেচনা না করায় তিনি কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। রঞ্জিতে দারুণ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছেন না কেন— সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে শামি বলেছেন, “আমি শুধু খেলতে পারি। নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত আমার হাতে নেই। কেন সুযোগ পাচ্ছি না, তা নিয়ে ভাবতেই পারি। এর বাইরে আর কিছু করার নেই।” তাঁর এই মন্তব্য ক্রিকেট মহলে ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
প্রশ্ন উঠছেই— রঞ্জির চার ম্যাচে ২০ উইকেট কি শামির পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ? বিশেষ করে অসমের বিরুদ্ধে গত ম্যাচে শামিদের দল ২০ উইকেট তুলতে ব্যর্থ হওয়া তাঁর বিপক্ষে যেতে পারে। যদিও শামি নিজে দু’ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন, কিন্তু অর্শদীপ সিংহ, মহম্মদ সিরাজদের মতো তরুণ বোলারদের জায়গা কি তিনি পেতে পারেন? এর উপর আবার হার্দিক পাণ্ড্য চোট সারালে সাদা বলের দলে তাঁর ফেরাও প্রায় নিশ্চিত। ফলে প্রতিযোগিতা যথেষ্ট কঠিন।
তবে শামির অন্তর্দৃষ্টি বলছে— তাঁকে ভারতীয় দলের পরিকল্পনায় রাখা হচ্ছে না। প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর ও কোচ গৌতম গম্ভীরের সিদ্ধান্তে তাঁর নাম বার বার বাদ যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। আগরকর কয়েক দিন আগে মন্তব্য করেছিলেন, শামির ফিটনেসের কোনও আপডেট তাঁদের কাছে নেই। জবাব দিতে দেরি করেননি শামি— ধারাবাহিক ভাবে রঞ্জিতে উইকেট শিকার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট, ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি— তিন ফরম্যাটেই ভারত মুখোমুখি হবে বাভুমাদের। তার আগে শামির মন্তব্য যে নির্বাচকদের উদ্দেশেই ছোড়া, তা ক্রিকেট মহল মনে করছে। রঞ্জিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স আবারও প্রমাণ করছে যে তিনি এখনও জাতীয় দলের লড়াইয়ে যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক।
এ দিকে, আইপিএলের মঞ্চে শামির প্রস্তুতি চলছে সমান তালে। আগামী বার লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলবেন তিনি। আরও বড় বিষয়— বোলিং কোচ হিসেবে থাকছেন ভরত অরুণ। ভারতীয় দলের প্রাক্তন বোলিং কোচের সঙ্গে আবার কাজ করার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শামি বলেছেন, “অরুণ স্যরের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক। আগেও একসঙ্গে কাজ করে সাফল্য পেয়েছি। লখনউয়ের হয়ে আবারও সেই সাফল্য অর্জন করতে চাই।”
সব মিলিয়ে শামির পারফরম্যান্স, আত্মবিশ্বাস এবং অভিজ্ঞতা— সবই ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিনি এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে তৈরি। এখন দেখার— নির্বাচকরা কি তাঁর এই জোরালো বার্তা শুনবেন, নাকি শামিকে আরও অপেক্ষায় থাকতে হবে ভারতের জার্সিতে ফেরার জন্য।

