Sunday, November 30, 2025

পেশিশক্তি বাড়াতে, মেদ কমাতে ও মন একাগ্র করতে অষ্টাঙ্গ নমস্কার— এক আসনেই বহু উপকার

Share

পেশিশক্তি বাড়াতে, মেদ কমাতে ও মন একাগ্র করতে অষ্টাঙ্গ নমস্কার!

বর্তমান প্রজন্মে ফিটনেসের প্রধান লক্ষ্য— দ্রুত মেদ ঝরানো, পেশিকে আরও শক্তিশালী করা এবং শরীরকে টোনড রাখা। কিন্তু শুধু ওজন কমলেই শরীর সুস্থ হয় না; প্রয়োজন ভিতর থেকে শক্তি বাড়ানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা। অনেকেই ভাবেন, এত সুবিধা এক আসন থেকে পাওয়া অসম্ভব। অথচ যোগচর্চায় রয়েছে এমনই এক আসন— অষ্টাঙ্গ নমস্কার— যা শরীর ও মনকে একসঙ্গে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত কার্যকর।

অষ্টাঙ্গ নমস্কার হল সূর্য নমস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই আসনে শরীরের আটটি অংশের সংস্পর্শ ঘটে মাটির সঙ্গে— দুই পা, দুই হাঁটু, দুই হাত, বুক এবং থুতনি। তাই এর নাম অষ্টাঙ্গ। নিয়মিত অনুশীলনে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যথা কমে, পেশিশক্তি বাড়ে, মেদ কমে যায়, এমনকি মানসিক সতেজতাও অনুভব করা যায়।


কীভাবে করবেন অষ্টাঙ্গ নমস্কার?

১) প্রথমে যোগম্যাটের উপর উপুড় হয়ে চিতপাত অবস্থায় শুয়ে পড়ুন। হাতের কনুই ভর করে শরীর ধীরে উপরে তুলুন।
২) পায়ের ভর থাকবে দুই পায়ের বুড়ো আঙুলে, পা থাকবে সোজা ও শক্ত।
৩) দুই কনুই শরীরের পাশে থাকবে ৯০ ডিগ্রি কোণে। হাতের তালু মাটি স্পর্শ করবে।
৪) দেখতে অনেকটা প্ল্যাঙ্কের মতো লাগলেও এখানেই আসনের মোচড়— ধীরে ধীরে বুক, হাঁটু ও থুতনি মাটির দিকে নামান।
৫) এই অবস্থায় শরীরের আটটি অঙ্গ একসঙ্গে মাটি ছোঁবে— এটাই অষ্টাঙ্গ নমস্কারের আসল ভঙ্গি।
৬) এই অবস্থায় ২০–৩০ সেকেন্ড শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে থাকুন, তারপর ধীরে ফিরে আসুন আগের ভঙ্গিতে।


অষ্টাঙ্গ নমস্কারের উপকারিতা

১. পেশির শক্তিবৃদ্ধি

এই এক আসনেই শরীরের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পেশি সক্রিয় হয়। বিশেষ করে হাত, কাঁধ, বুক, কোমর ও পায়ের পেশি শক্তিশালী হয়। তাই যারা পুরো শরীরের জোর বাড়াতে চান, তাঁদের জন্য এটি আদর্শ আসন।

২. মেদ কমায় দ্রুত

পেট, হাত, বুক ও উরুর অতিরিক্ত চর্বি কমাতে এই আসন অসম্ভব কার্যকর। নিয়মিত করলে বিপাকের হার বাড়ে, ফলে ওজন হ্রাস ত্বরান্বিত হয়।

৩. শরীরের নমনীয়তা ও ভারসাম্য উন্নতি

অষ্টাঙ্গ নমস্কার শরীরকে টানটান করে, পেশির নমনীয়তা বাড়ায় এবং ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘদিন ব্যায়াম না করলে যে কাঠিন্য আসে, তা দূর হয়।

৪. ক্লান্তি ও অবসাদ কমায়

মানসিক চাপ, ক্লান্তি ও ঝিমুনি দূর করতে এই আসন অত্যন্ত উপযোগী। রক্তসঞ্চালন বাড়ায় বলে শরীর তুলনামূলক চাঙ্গা থাকে।

৫. মনঃসংযোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে

শ্বাসপ্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ এই আসনের মূল। ফলে মন শান্ত থাকে, উদ্বেগ কমে, মনোযোগ বাড়ে। যারা পড়াশোনা বা দীর্ঘ সময় মনোসংযোগের কাজে যুক্ত, তাঁদের জন্য এটি দারুণ উপকারী।

৬. বাত ও ব্যথা উপশমে কার্যকর

পিঠ, কাঁধ, কোমরের হালকা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত অভ্যাস করলে জয়েন্টের নড়াচড়া উন্নত হয়।


কখন এই আসন করা ঠিক নয়?

  • নতুনরা প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে করবেন
  • গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলা উচিত
  • উচ্চ রক্তচাপ থাকলে করবেন না
  • মাইগ্রেন থাকলে বা মাথা ঘোরা সমস্যা থাকলে এড়ানো ভাল
  • হাঁটু, মেরুদণ্ডে চোট বা সদ্য অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে করা যাবে না

Read more

Local News