Sunday, November 30, 2025

রহস্যে মোড়া ‘ধুরন্ধর’: মেজর মোহিত শর্মার জীবনেরই কি প্রতিচ্ছবি রণবীরের চরিত্র?

Share

মেজর মোহিত শর্মার জীবনেরই কি প্রতিচ্ছবি রণবীরের চরিত্র?

বলিউডের আসন্ন ছবি ধুরন্ধর মুক্তির আগেই তুমুল আলোচনার কেন্দ্রে। ট্রেলার প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে জল্পনা—এ কি শুধুই অ্যাকশনভরা কল্পকাহিনি, নাকি সত্যিকারের কোনও ভারতীয় বীর সেনার জীবনগাথা? আদিত্য ধর পরিচালিত এই সিনেমা যে বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি, ট্রেলারেই সে দাবি উঠে এসেছে। আর সেখান থেকেই দর্শকের কৌতূহল, রণবীর সিংহ কি অভিনয় করছেন শহিদ মেজর মোহিত শর্মার রূপ ধরে?

ট্রেলারে দেখা যায় রণবীর সিংহকে এক ভয়ঙ্কর, রহস্যময় চরিত্রে—লম্বা চুল, দাড়ি, রক্তাক্ত মুখ, তীব্র দৃষ্টিতে আগুন ঝরানো। ‘পদ্মাবত’-এর খিলজি চরিত্রে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল বটে, তবে দর্শকের দাবি, ‘ধুরন্ধর’-এর রণবীর আরও অন্ধকার, আরও ভয়ঙ্কর। সঞ্জয় দত্ত, আর মাধবন, অক্ষয় খন্না এবং অর্জুন রামপাল— সকলের লুকই ইতিমধ্যে নজর কাড়ছে। ২৮০ কোটি টাকার বাজেটের এই সিনেমা মুক্তি পাবে আগামী ৫ ডিসেম্বর।

মেজর মোহিত শর্মা—কে ছিলেন তিনি?

১৯৭৮ সালে জন্ম নেওয়া মোহিত ছিলেন হরিয়ানার রোহতের সন্তান। ছোটবেলায় তাঁর নাম ছিল ‘চিন্টু’। উচ্চশিক্ষায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পড়তে তিনি এনডিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং স্বপ্ন পূরণের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। প্রশিক্ষণে সাঁতার, বক্সিং ও ঘোড়সওয়ারিতে তাঁর দক্ষতা সকলকে চমকে দিয়েছিল। এনডিএ-তে বন্ধুরা তাঁকে ডাকতেন ‘মাইক’ নামে।

১৯৯৮ সালে তিনি আইএমএ-তে যোগ দেন এবং ১৯৯৯ সালে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। প্রথম পোস্টিং হায়দরাবাদের মাদ্রাজ রেজিমেন্টে। পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্রীয় রাইফেলস এবং পরে এলিট প্যারা স্পেশ্যাল ফোর্সেস-এ যোগ দিয়ে হন দক্ষ কমান্ডো।

পাকিস্তানে গোপন অভিযান!

২০০৪ সালে সন্ত্রাসবাদ দমনে অসামান্য সাহসিকতার জন্য সেনাপদক লাভ করেন। ২০০৮ সালে কাশ্মীরে দায়িত্বে থাকার সময় তিনি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে গোপনে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছেন—এমন দাবি বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেখানকার গোপন কাজে তাঁর পরিচয় ছিল নাকি ‘ইকবাল’। এই বীরত্বই ‘ধুরন্ধর’-এর কাহিনির সঙ্গে আশ্চর্য মিল খুঁজে পাচ্ছে দর্শক।

শেষ লড়াই ও দেশের জন্য আত্মবলিদান

২০০৯ সালের ২১ মার্চ কুপওয়াড়া সেক্টরের হাফরুদা বনে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন মেজর মোহিত শর্মা। মৃত্যুর আগে তিনি চার জঙ্গিকে নিকেশ করেন এবং আহত দুই সেনাকে রক্ষা করেন। তাঁর অশেষ সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে মরণোত্তর অশোক চক্রে ভূষিত করা হয়।

২০১৯ সালে দিল্লির রাজেন্দ্র নগর মেট্রোস্টেশনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘মেজর মোহিত শর্মা রাজেন্দ্র নগর স্টেশন’

‘ধুরন্ধর’ কি তাঁর জীবন থেকে অনুপ্রাণিত?

ট্রেলারে সরাসরি কিছু বলা হয়নি, তবে রণবীরের চেহারা, পোশাক, অভিনয়ের ধাঁচ—সবই মিলে অনেকের ধারণা আরও দৃঢ় হচ্ছে যে চরিত্রটি মেজর মোহিত শর্মারই প্রতিবিম্ব। নির্মাতারা এ বিষয়ে মুখ না খুললেও দর্শক ইতিমধ্যেই রণবীরকে ‘ভারতের শহিদ বীর’র চরিত্রে দেখার অপেক্ষায়।

ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পরে সত্যিকারের গল্প কতটা উঠে আসবে, তা দেখার অপেক্ষায় সিনেপ্রেমীরা। তবে এটাই নিশ্চিত—দেশের এক মহান সেনানায়কের বীরত্বগাথাই এই ছবিকে আরও আবেগময় করে তুলেছে।


আপনি চাইলে আমি এটি আরও সংক্ষেপ, আরও দীর্ঘ, বা এসইও–অপ্টিমাইজড ভার্সনেও সাজিয়ে দিতে পারি।

Read more

Local News