এনডিএ-র আস্থার কেন্দ্র নীতীশই!
বিহারের নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন— ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই এই প্রশ্নে সরগরম ছিল রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতি। নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত এনডিএ ফের নীতীশ কুমারের হাতেই আস্থা রাখল। বুধবার বিহার বিধানসভায় এনডিএ পরিষদীয় দল তাঁকে নেতা হিসেবে বেছে নেয়। এরপর রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি জানান জেডিইউ নেতা। বৃহস্পতিবার আবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন নীতীশ— যা হবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের দশম শপথগ্রহণ।
গত কয়েক মাস ধরে নীতীশের স্বাস্থ্য নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়েছিল। এমনকি রাজনীতির দায়িত্ব তিনি আর সামলাতে পারবেন কি না, সে প্রশ্নও উঠেছিল। বিরোধীরা তো বটেই, এনডিএ-র মধ্যেও গুঞ্জন চলছিল— ‘নীতীশ-পরবর্তী সময় কি তাহলে এসে গেল?’ নির্বাচনে এনডিএ কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেনি। যদিও জেডিইউ বারবারই সাফ জানিয়ে দিয়েছিল যে, নেতৃত্ব দেবেন নীতীশই।
বহু উত্থান–পতনের মধ্যেও বিগত দুই দশকে বিহারের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নীতীশ কুমার। ২০০৫ সাল থেকে মাঝে কয়েক মাস বাদ দিলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার তাঁকেই ধরে রেখেছে। কখনও বিজেপির সঙ্গে, কখনও মহাগঠবন্ধনের হাত ধরে— একাধিক জোট পরিবর্তনের পরও পাটনার ক্ষমতার রাজনীতিতে তাঁর দাপট অটুট। বৃহস্পতিবার তিনি দশমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেবেন। পাটনার ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানে শপথগ্রহণের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই তুঙ্গে।
এই শপথে নীতীশের সঙ্গে শপথ নিতে পারেন আরও ২২ জন মন্ত্রী। যদিও কোন দলে কত আসন যাবে, সে ব্যাপারে সরকারি ঘোষণা হয়নি। দুটি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দখল করেছে বিজেপি। সম্রাট চৌধুরি এবং বিজয় সিন্হা— দু’জনেই নীতীশের সঙ্গে শপথ নেবেন বলে নিশ্চিত হয়েছে। অন্যদিকে এলজেপি (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসোয়ানও জানিয়েছিলেন, তাঁর দল সরকারে থাকবে। সেক্ষেত্রে তাঁর দলও মন্ত্রিত্ব চাইবে।
এবারের নির্বাচনে এনডিএ পেয়েছে ২০২টি আসন— যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ১২২-এর তুলনায় অনেক বেশি। বিজেপি ও জেডিইউ কার্যত সমান শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বিজেপি পেয়েছে ৮৯টি আসন, যেখানে জেডিইউ-র দখলে ৮৫টি। তুলনায় ২০২০ সালে নীতীশের অবস্থা ছিল অনেক খারাপ— ১১৫টি আসনে লড়ে মাত্র ৪৩টি আসন পেয়েছিল জেডিইউ। আর সেই সময় বিজেপি পেয়েছিল ৭৪টি আসন। ফলে পাঁচ বছরে হিসেব পাল্টে গেছে অনেকটাই।

