ঠোঁটেই লুকোনো সৌন্দর্যের গোপন রহস্য!
দক্ষিণী সিনেমার ‘লেডি সুপারস্টার’ নয়নতারাকে ঘিরে মাতামাতির শেষ নেই। বয়স ৪১, দুই সন্তানের মা— তবুও তাঁর ঝলমলে রূপে বুঁদ দর্শকরা। ঘন চোখ, লম্বা আঁখিপল্লব, নিখুঁত ভ্রু, আর ঠোঁটের ঠিক উপরে সেই খচিত তিল— সব মিলিয়ে সিনেমার পর্দায় তাঁর উপস্থিতিই যেন আলাদা আলো ছড়ায়। নিয়মিত ওয়ার্কআউট এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখার পাশাপাশি সৌন্দর্যচর্চায় তিনি যেসব টোটকা মানেন, তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হল তাঁর ঠোঁট সাজানোর বিশেষ কৌশল। ঠিক কী করেন নয়নতারা? কেনই বা তাঁর ঠোঁটের সৌন্দর্য নিয়ে এত আলোচনা?
নয়সন্তারা বহুবার বলেছেন, সৌন্দর্য ধরে রাখতে তিনি বেশি ভরসা রাখেন স্থানীয় ও ঘরোয়া খাবারের উপর। শরীরে জলশূন্যতা যেন না হয়, সেটা তিনি সব সময় সচেতন। শরীরের ভিতর পুষ্টি জোগানোই যে বাইরের সৌন্দর্যের ভিত্তি, তা মানেন তিনি। তবে মেকআপের প্রসঙ্গে এসে আলাদা কিছু অভ্যাস আছে অভিনেত্রীর, যেগুলিতে নেই প্রচলিত নিয়মের অনুগত থাকা। বরং নিজের ত্বক আর প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি করেছেন বিশেষ কৌশল।
ঠোঁটের মেকআপে আটকে আছে ‘জাদু’
মেকআপে সাধারণত মুখে যে যত্ন নেওয়া হয়, ঠোঁট যেন বেশির ভাগ সময়ই উপেক্ষিত থেকে যায়। কিন্তু নয়নতারা মনে করেন, ঠোঁটই পুরো লুকের কেন্দ্রবিন্দু। তাই লিপস্টিক লাগানোর আগে তিনি যা করেন, তা অনেকেরই অজানা।
প্রথমেই নয়নতারার মতে, ঠোঁটকে ভাবুন ‘খালি ক্যানভাস’ হিসেবে। কারণ অনেকেরই ঠোঁটে রঙের অসমতা থাকে— কোথাও হালকা, কোথাও গাঢ়, কোথাও আবার কালচে। এমন অবস্থায় সরাসরি লিপস্টিক লাগালে আসল রঙ ফুটে ওঠে না, স্থায়িত্বও কমে যায়।
এই কারণেই নয়নতারার ঠোঁটসজ্জা শুরু হয় ‘বেস মেকআপ’ দিয়ে।
নয়নতারার ধাপে ধাপে লিপ-মেকআপ
১. প্রথমে ফাউন্ডেশন
মুখের মতো ঠোঁটেও তিনি পাতলা করে ফাউন্ডেশন লাগান। এতে ঠোঁটের স্বাভাবিক রঙের অসমতা দূর হয়, ঠোঁট সমান রঙের হয়ে ওঠে।
২. ফাউন্ডেশনের উপর সেটিং পাউডার
লিপস্টিক যাতে পরতে পরতে গলে না যায় বা দাগ না ফেলে, তাই তিনি হালকা পাউডার দিয়ে ঠোঁট সেট করে নেন। এতে ঠোঁটের পৃষ্ঠ শুকনো ও সমান হয়।
৩. লিপলাইনার প্রথম স্তর
ঠোঁটের আকার স্পষ্ট করতে তিনি লিপলাইনার দিয়ে পুরো ওষ্ঠাধরটি সুন্দরভাবে আঁকেন। অনেকে শুধু বর্ডার পর্যন্ত লিপলাইনার দেন, কিন্তু নয়নতারা লাইনার দিয়ে ঠোঁট ভরাটও করেন। এতে লিপস্টিক দীর্ঘস্থায়ী হয়।
৪. লিপস্টিক— কিন্তু নয় ‘ঘষে’ লাগানো!
নয়নতারার অন্যতম কৌশল হল— তিনি লিপস্টিক ঠোঁটে ঘষে ঘষে লাগান না। বরং হালকা চাপে ঠোঁটে ‘থুপে থুপে’ দেন রঙ। এতে ঠোঁট আরও ভরাট ও মোটা দেখায়, ওষ্ঠাধর নরম ও আকর্ষণীয় মনে হয়।
৫. শেষে ফিঙ্গার ব্লেন্ডিং
আঙুল দিয়ে একটুখানি ব্লেন্ড করে ঠোঁটে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফুটিয়ে তোলেন।
কেন নয়নতারার এই পদ্ধতি এত কার্যকর?
• ঠোঁট সমান রঙের হওয়ায় লিপস্টিকের শেড আসল রূপ পায়।
• লিপস্টিক দীর্ঘ সময় টিকে থাকে।
• ঠোঁট অনেক বেশি ভরাট ও নরম দেখায়।
• মুখের লুকের সঙ্গে ঠোঁটের আকর্ষণ পুরোপুরি সামঞ্জস্য বজায় রাখে।
সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতি যে কারও মুখে মানানসই হতে পারে। তাই নয়নতারা যেমন ‘লেডি সুপারস্টার’, তাঁর লিপ-মেকআপ টিপসও হয়ে উঠেছে অসংখ্য অনুরাগীর অনুপ্রেরণা।

