Sunday, November 30, 2025

বাড়ি বাড়ি ছবি তুলতে হবে বিএলও-দের! ভোটার ফর্মে বাধ্যতামূলক নয় ছবি, তবু কেন কঠোর কমিশন?

Share

বাড়ি বাড়ি ছবি তুলতে হবে বিএলও-দের!

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ জোরকদমে চলছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বুথ স্তরের আধিকারিকেরা (বিএলও) বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন এবং ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করছেন। কিন্তু এ বারের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে আরও কঠোরতা, আরও প্রযুক্তিগত নজরদারি। নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে—ভোটার নিজে ফর্মে ছবি দিতে বাধ্য নন ঠিকই, কিন্তু প্রতিটি ভোটারের ছবি বিএলও অ্যাপের মাধ্যমে তুলতেই হবে

📌 কেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছবি তুলতে হবে বিএলও–দের?

কমিশনের নির্দেশ অনুসারে, রাজ্যের প্রায় ৮০ লক্ষ ভোটারের এনুমারেশন ফর্ম ইতিমধ্যেই ডিজিটাইজ় করা হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-চালিত একটি বিশেষ সফটওয়্যার, যা ভোটারের মুখের ছবি মিলিয়ে ভুয়ো ও নকল ভোটার শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। তাই অ্যাপের মাধ্যমে তোলা রিয়েল-টাইম ছবি অপরিহার্য বলেই জানাচ্ছে কমিশন।

তবে ফর্মে যদি পরিষ্কার ছবি সংযুক্ত করা থাকে, নতুন করে ছবি তোলার প্রয়োজন নাও পড়তে পারে। যাঁরা সাময়িকভাবে ছবি তুলতে অক্ষম বা অনুপস্থিত, তাঁদের ক্ষেত্রে আপাতত পুরনো ছবি দিয়েই ফর্ম জমা নেওয়া হবে।

📑 কমিশনের নয়া নির্দেশিকা: কী কী জানানো হল?

সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পষ্ট করেছে—

১) মৃত, স্থানান্তরিত বা দ্বৈত ভোটার শনাক্তকরণ

বিএলওদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে—যাঁরা মারা গিয়েছেন, এলাকা ছেড়ে গিয়েছেন অথবা যাঁদের নাম ভুলবশত দু’বার রয়েছে, তাঁদের তথ্য যথাযথভাবে নথিভুক্ত করতে হবে।

২) প্রতিদিন ৫০টি ফর্ম জমার নিয়ম

বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) যদি প্রতিদিন ৫০টি পর্যন্ত ফর্ম জমা দেন, তবে তাঁকে নিশ্চিত করতে হবে—

  • ফর্মের তথ্য সঠিক,
  • ভোটার তাঁর উপস্থিতিতেই সই করেছেন,
  • তাঁর নিজের ফোন নম্বর ও ঠিকানা ফর্মে উল্লেখ থাকবে।

৩) ভুল তথ্য দিলে কঠোর শাস্তি

এনুমারেশন ফর্মের অপব্যবহার বা ভুল তথ্য দিলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৩১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এক বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে।

৪) বিএলওদের দায়িত্ব আরও বাড়ল

ফর্ম যাচাইয়ে কোনও ভুল থাকলে বিএলওকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে—এই মর্মে নির্দেশ এসেছে ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে।

৫) সম্পূর্ণ ডিজিটাইজ়ড রেকর্ড

সব তথ্য—নাম, নথি, ছবি, স্বাক্ষর—ডিজিটাল রেকর্ডে থাকবে। তাই ভুল বা অসংগতি সহজেই চিহ্নিত করা যাবে।

৬) ফর্মে ভুল থাকলে সহজ সংশোধন

কেবল একটি দাগ টেনে ভুল কেটে দিয়ে একই সারির খালি স্থানে সঠিক তথ্য লেখাই যথেষ্ট। নতুন ফর্মের প্রয়োজন নেই।

৭) ফর্ম না পেলে কী করবেন?

যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে, তবু ফর্ম পাননি, তাঁরা যোগাযোগ করতে পারেন—

  • টোল-ফ্রি নম্বর: ১৯৫০
  • ফোন: ০৩৩-২২৩১-০৮৫০
  • হোয়াটসঅ্যাপ: ৯৮৩০০৭৮২৫০
    নিজের নাম, বিধানসভা কেন্দ্র, পার্ট নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর পাঠিয়ে জানাতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কমিশন।

📍 ইতিমধ্যেই ৯৯% ফর্ম বিতরণ সম্পন্ন

গত ৪ নভেম্বর থেকে ফর্ম বিলি শুরু হয়েছিল। কমিশনের রবিবার রাতের রিপোর্টে বলা হয়েছে—৯৯ শতাংশের বেশি ফর্ম বিতরণ হয়ে গিয়েছে, যা সুষ্ঠু ভোটার তালিকা প্রস্তুতির পথে বড় পদক্ষেপ।

Read more

Local News