হাসিনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে!
বাংলাদেশে উত্তেজনা এখন টগবগে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-র বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলার রায় ঘোষণার ঠিক আগের দিন থেকেই পরিস্থিতি ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় শোনাবে— আর তার আগের রাতে ঢাকা-সহ দেশের বহু জায়গায় আগুন, বিক্ষোভ, ককটেল হামলা, পুলিশি অভিযানে উত্তাল হয়ে উঠল গোটা দেশ।
ঢাকার পথে পথে আগুন, লক্ষ্যহীন নয়— নিশানায় অ্যাম্বুল্যান্সও!
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল— কোথাও রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা বাস জ্বলছে, কোথাও সরকারি ভবনের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণ, আবার কোথাও অ্যাম্বুল্যান্সের উপর হামলা! রবিবার গভীর রাতে ঢাকার তিতুমীর কলেজ, আমতলী মোড়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টানা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
সর্বাধিক উদ্বেগের কারণ— অ্যাম্বুল্যান্সে ককটেল নিক্ষেপ। আহত বা অসুস্থ মানুষকে বহনকারী এই যানও বিদ্রোহীদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি।
পরিস্থিতি হালকা নয়: ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশও ব্যর্থ
অশান্তি থামাতেই রবিবার সন্ধ্যায় কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ—
যেখানে আগুন লাগাতে দেখা যাবে, ককটেল ছুঁড়তে দেখা যাবে, সেখানেই দেখামাত্র গুলি।
এত কঠোর নির্দেশ সত্ত্বেও রাতভর ককটেল হামলা ও অগ্নিসংযোগ থামেনি। পুলিশের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যে অশান্তি তৈরি হচ্ছে, তার নেপথ্যে মূলত আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতীরা।
কোন রায় ঘোষণা হবে আজ?
সোমবার রায় শোনাবেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর বেঞ্চ।
প্রধান অভিযোগ:
- জুলাই ২০২৫-এ ছাত্র-যুবদের আন্দোলন দমন করতে মানবতাবিরোধী অপরাধ
- আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
গত বছরের ৫ অগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
ঢাকায় পুনরায় উত্তেজনা: মশাল মিছিল, পথ অবরোধ
যদিও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ, তবুও রবিবার রাতে ঢাকার ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে দলীয় সমর্থকেরা মশাল মিছিল করেন। প্রায় ২০ মিনিট যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ বলেছে, গত ১০ নভেম্বর থেকে দেখা দেওয়া অশান্তির পিছনেও এই দলীয় সমর্থকদের হাত রয়েছে।
ধারাবাহিক হামলা— কারা জড়িত?
রবিবার গভীর রাতে যেসব ঘটনার খবর পাওয়া গেছে—
- তিতুমীর কলেজের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ
- আমতলী মোড় এলাকায় হামলা
- ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পানির ট্যাঙ্কের সামনে একটি বাসে আগুন
- পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ
এই সব ঘটনাতেই আতঙ্কে মানুষজন। বহুজন আহত।
রায়ের আগে বাংলাদেশ ফুটন্ত অবস্থায়
হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথম দিন থেকেই রাজনৈতিকভাবে বিস্ফোরক। আর রায় ঘোষণার ঠিক আগে দেশজুড়ে যে সহিংসতা দেখা যাচ্ছে, তা রীতিমতো চিন্তার বিষয়। ‘দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশে স্পষ্ট— আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়ানক। কিন্তু সেই নির্দেশেও সহিংসতা কমেনি।

