⚠️ ফোনে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’!
ডিজিটাল যুগে যত বাড়ছে অনলাইন কেনাকাটা ও লেনদেন, ততই বেড়ে চলেছে নতুন এক আতঙ্ক — ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ (Digital Arrest)। এখন প্রতারকরা আর ওটিপি চাইছেন না; তারা সরাসরি ফোনেই গ্রেফতার করছেন, ভয় দেখাচ্ছেন, আর হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। বিশেষ করে বয়স্ক ও উচ্চবিত্ত নাগরিকরাই এই প্রতারণার সহজ শিকার হয়ে উঠছেন।
📱 কী এই ডিজিটাল গ্রেফতার?
এটি এক ধরনের অনলাইন প্রতারণা, যেখানে কেউ পুলিশ, সিবিআই, সাইবার শাখা বা অন্য সরকারি সংস্থার আধিকারিক সেজে ফোন করে। বলা হয়,
“আপনার আধার/প্যান বেআইনি কাজে ব্যবহার হয়েছে”,
“আপনার নামে একটি পার্সেল থেকে মাদক বা টাকা পাওয়া গেছে”,
“আপনি মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় জড়িত!”
এরপর শুরু হয় ভয় দেখানো, ভিডিও কলে “ডিজিটাল অ্যারেস্টের” নাটক, ভুয়ো এফআইআর, এমনকি ‘জামিনের জন্য’ টাকা চাওয়াও।
বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট বলছেন — “ডিজিটাল মাধ্যমে কাউকে গ্রেফতার করা অসম্ভব।”
অবসরপ্রাপ্ত সাইবার আধিকারিক কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের ভাষায়,
“গ্রেফতার মানে হচ্ছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তকে স্পর্শ করে আইনত আটক করা। ফোন বা ভিডিও কলে এর কোনও বৈধতা নেই।”
🌐 প্রতারণার উৎস ও বিস্তার
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই চক্র জামতাড়া নয়, বরং বিদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে — থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম থেকে নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কগুলির মাধ্যমে।
ভারতের সাইবার অপরাধ দমন কেন্দ্র ইতিমধ্যে:
- ১৭০০টিরও বেশি স্কাইপ আইডি
- ৫৯,০০০টিরও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর
- ৬.৬৯ লক্ষ সিমকার্ড
বন্ধ করেছে ডিজিটাল গ্রেফতার প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে।
🎯 কারা হচ্ছেন সবচেয়ে বেশি শিকার?
| বিভাগ | কেন তারা টার্গেট |
|---|---|
| বয়স্ক নাগরিক | প্রযুক্তি সম্পর্কে কম জ্ঞান |
| ব্যস্ত পেশাজীবী | ভয় পেয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া |
| অনলাইন ক্রেতা | পার্সেল জালিয়াতির ভয় দেখানো সহজ |
| একা থাকা মানুষ | ভিডিও কলে ভুল বোঝানো সহজ |
| সামাজিকভাবে পরিচিত ব্যক্তি | মানহানির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় |
⚠️ কোথায় কোথায় ফাঁদ পাতা?
- ভুয়ো কুরিয়ার কল: “আপনার পার্সেলে মাদক ধরা পড়েছে।”
- পুলিশ/সিবিআই সেজে: নকল আইডি, ব্যাকগ্রাউন্ডে থানার শব্দ।
- ব্যাংক বা RBI প্রতিনিধি সেজে: “অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হবে।”
- আয়কর দফতর সেজে: “ট্যাক্স ফাঁকির মামলা হয়েছে।”
- +৬৫, +৯৭১ ইত্যাদি বিদেশি নম্বর থেকে কল।
🔒 বাঁচার উপায়
✅ অচেনা কল বা ভিডিও কলে ‘অফিসার’ সেজে কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে কল কেটে দিন।
✅ কখনও নিজের ব্যাঙ্ক বা ব্যক্তিগত তথ্য ফোনে শেয়ার করবেন না।
✅ কল রেকর্ড বা স্ক্রিনশট সংরক্ষণ করুন এবং নিকটতম থানায় বা সাইবার হেল্পলাইনে জানান।
✅ সন্দেহ হলে কল করুন – জাতীয় সাইবার হেল্পলাইন নম্বর: ১৯৩০।

