অর্পিতা নিয়ে সরব পার্থ চট্টোপাধ্যায়!
সাড়ে তিন বছর জেলের পর ফিরে এলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারের পর দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে এবার মুখ খুললেন তিনি— নিজের ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি টাকা, দল, এবং নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে। বেহালা পশ্চিমের বিধায়কের কথায়, “আমার স্ত্রী প্রয়াত। তার পর কোনও মহিলা যদি আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান, তাতে আপত্তি কোথায়?”
💬 অর্পিতা নিয়ে খোলামেলা পার্থ
জেল থেকে বেরিয়েই মিডিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে পার্থ স্পষ্টভাবে বলেন, “অর্পিতা আমার বান্ধবী, এতে লুকোনোর কিছু নেই। কিন্তু তাঁকে যে ভাবে অসম্মান করা হয়েছে, তা অন্যায়।”
তিনি অভিযোগ করেন, সংবাদমাধ্যম তাঁর সম্পর্ক নিয়ে অতিরঞ্জিত ও রঙিন গল্প লিখেছে।
পার্থের মন্তব্য,
“একজন মহিলাকে অসম্মান করা খুব সহজ। অর্পিতা শুধু আমার বন্ধু নয়, তিনি একজন অভিনেত্রী— ৩০-৩৫টি ওড়িয়া ছবিতে কাজ করেছেন।”
এরপরই তাঁর তির্যক মন্তব্য —
“কারও দুটো বউ থাকতে পারে, আর আমার একটা বান্ধবী থাকতে পারে না?”
ইঙ্গিত স্পষ্ট— শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের দিকেই তাক করেছিলেন তিনি।
💰 কোটি টাকার প্রশ্নে কী বললেন পার্থ?
অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ। তদন্তে জানা যায়, টাকাগুলো নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তবে পার্থ একে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন,
“আমার বাড়ি থেকে কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। যেখান থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে, সে তো আমার বান্ধবীর ফ্ল্যাট। ওর উত্তর ও-ই দেবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, কোনও দুর্নীতি হয়নি।
“আমি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন কেউ দুর্নীতির কথা বলেনি। আমি সরে যাওয়ার পরই কেন এত অভিযোগ উঠল?”
🏛️ দল, মমতা ও অভিষেককে নিয়ে অবস্থান
দলের সঙ্গে সম্পর্কের প্রসঙ্গে পার্থ স্পষ্ট বলেন,
“তৃণমূলই আমার দল। আমি দল থেকে নই, দলেরই সঙ্গে আছি।”
তাঁর দাবি, তাঁকে সাসপেন্ড করার খবর তিনি জেলে নয়, ইডি হেফাজতে শুনেছিলেন।
পার্থ বলেন,
“আমি দলের কোনও বিরুদ্ধাচরণ করিনি। আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, তবুও আমি তৃণমূলেরই সৈনিক।”
তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর অবস্থান ইতিবাচক—
“অভিষেকই ভবিষ্যতের ‘অটোম্যাটিক চয়েস’। আমি ওর পাশে ছিলাম, আবার আমিই জেল খেটেছি।”
💸 বিধায়ক তহবিল ফেরত দেবেন পার্থ
জেলে থাকাকালীন কাজ না করতে পারায় তিনি নিজের বিধায়ক তহবিলের টাকা ফেরত দিতে চান। বলেছেন, কিছু টাকা রেখে বাকিটা দেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে।
এই পদক্ষেপে অনেকেই দেখছেন নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর প্রচেষ্টা।
🕯️ জেলের দিনগুলি আর নতুন শুরু
জেলের জীবনের কথা বলতে গিয়ে পার্থ জানান,
“রাতে ঘুম হত না, অন্ধকারে বসে ভাবতাম— আমি বাঁচব কি না।”
বাড়ি ফিরে প্রথম রাতেও ঘুম আসেনি, ভাই ও ভাইঝির সঙ্গে গল্প করেই সময় কেটেছে।
এখন তিনি আবার সক্রিয় হতে চান। বলেছেন,
“বেহালার মানুষের কাছেই বিচার চাইব। প্রয়োজনে ঘরে ঘরে অটো নিয়ে ঘুরব। তিন বছর কিছু বলতে পারিনি, এখন বলতে চাই— আমাকে বলতে দাও।”
🔚 শেষ কথা
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্বর আগের মতোই আত্মবিশ্বাসী, কিন্তু চোখে ক্লান্তি।
অর্পিতাকে “বান্ধবী” বলে স্বীকার করার সাহস দেখালেন তিনি, তবে টাকার দায় এড়ালেন।
তৃণমূল এখনও তাঁর ঘর— এটাই বারবার জানালেন।

