ভয়ঙ্কর পেশার নেপথ্যে ব্রিটেনের ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক ক্লিনার’!
মানুষ যেখানে এক ফোঁটা রক্ত দেখলেই ভয় পায়, সেখানে তিনি জমাট রক্ত, দুর্ঘটনার দেহাবশেষ, আত্মহত্যার স্থান—সব কিছুই নিখুঁতভাবে পরিষ্কার করেন। হ্যাঁ, এ কোনও সিনেমার গল্প নয়, এ ব্রিটেনের এক বাস্তব চরিত্র বেন জাইলস-এর কাহিনি—যিনি ২৫ বছর ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর পেশার সঙ্গে যুক্ত থেকে গড়ে তুলেছেন হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য।
🧹 ভয়ঙ্কর পেশা, ভয়হীন মানুষ
বেন জাইলস এখন ব্রিটেনের শীর্ষ বায়ো-হ্যাজার্ড ক্লিনিং বিশেষজ্ঞ। তাঁর সংস্থা Ultima Cleaning কাজ করে এমন জায়গায়, যেখানে সাধারণ মানুষ পা রাখতেও ভয় পাবে—অপরাধস্থল, দুর্ঘটনার এলাকা, বিস্ফোরণ বা আত্মহত্যার দৃশ্য।
তিনি জানিয়েছেন,
“আমার হাতে এসেছে মানুষের শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গ। রক্ত, প্রস্রাব, এমনকি শ্লেষ্মা পর্যন্ত পরিষ্কার করেছি।”
🧠 অভিজ্ঞতা গড়েছে বিশেষজ্ঞ
বেনের জীবনের শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। ২০ বছর বয়সে জানলা পরিষ্কারের কাজ করতেন। একদিন এক গ্রাহকের বাড়ি পরিষ্কার করতে গিয়ে জীবনের প্রথম ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। সেখান থেকেই শুরু “ডেথ ক্লিনিং” কেরিয়ার।
এখন তিনি প্রতি সপ্তাহে এমন ১০টিরও বেশি “ক্রাইম সিন” বা দুর্ঘটনার জায়গা পরিস্কার করেন। নিচের টেবিলটি দেখে নিন বেনের পেশাগত যাত্রা 👇
| বছর | মাইলস্টোন | অর্জন |
|---|---|---|
| ১৯৯৮ | জানলা পরিষ্কারের কাজ শুরু | প্রথমবার মৃতদেহ পরিষ্কার করেন |
| ২০০0 | প্রতিষ্ঠা করেন Giles Cleaning | জৈব-ঝুঁকি ক্লিনিংয়ে প্রবেশ |
| ২০০৫ | নাম বদলে রাখেন Ultima | ব্রিটেনের শীর্ষ বায়ো-হ্যাজার্ড ক্লিনিং সংস্থা |
| ২০১০ | প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুরু | ৬০০ ফ্রিল্যান্স ক্লিনারের দল তৈরি |
| ২০২৫ | ৩৭০০ কোটি টাকার মূল্যায়ন | Ultima বিক্রি করে অবসর জীবন |
⚰️ এক ভয়ঙ্কর স্মৃতি
বেন বলেন,
“একবার আমাকে এমন একটি বাড়ি পরিষ্কার করতে বলা হয়েছিল, যেখানে এক স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করেছিলেন। রান্নাঘরের ড্রয়ার পর্যন্ত রক্ত পৌঁছেছিল। আমি সেই দৃশ্য কোনওদিন ভুলতে পারব না।”
🧬 ভয় থেকে সম্পদে
আজ বেন একজন কোটিপতি পরামর্শদাতা, যিনি বিশ্বজুড়ে অপরাধস্থল পরিষ্কারের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। এমনকি, তিমি মৃতদেহ কেটে সরানোর কাজও করেছেন তিনি—একটি ২২ মিটার লম্বা তিমি পচে যাওয়ার পর বন্দরে আটকে পড়েছিল, যা বৈদ্যুতিন করাত দিয়ে অংশে অংশে সরানো হয়।
🌿 নতুন জীবনের পথে
এখন বেন পেশা থেকে অবসর নিয়েছেন। একটি ইতালীয় রেস্তরাঁ চালান, পাশাপাশি গরু পোষেন। কিন্তু তাঁর ফোন এখনো বাজে—পুরনো ছাত্ররা বিপদে পড়লেই তাঁর কাছে পরামর্শ চায়।

