Monday, December 1, 2025

‘কত ওয়াইন খেয়েছি, স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি’ — মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখে কী ভাবছিলেন সইফ আলি খান

Share

মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখে কী ভাবছিলেন সইফ আলি খান!

মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজের জীবনকে নতুন করে দেখা — এই অভিজ্ঞতা খুব কম মানুষই পান। বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খান এমনই এক ভয়াবহ মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, যা আজও তাঁকে তাড়া করে ফেরে। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি গভীর রাতে নিজের বাড়িতেই ছুরিকাহত হন তিনি। সেই রাতের স্মৃতি এখনও যেন তাঁর শরীর ও মনে খোদাই হয়ে আছে।

সেই রাতে চুরির উদ্দেশ্যে এক দুষ্কৃতী ঢুকে পড়েছিল সইফের বাড়িতে। প্রথমে সে ঢোকে সইফের কনিষ্ঠপুত্র জেহ-র ঘরে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে জেগে উঠে ছোট্ট জেহ চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে। সেই আওয়াজ শুনেই ছুটে যান সইফ। ছেলেকে রক্ষা করার চেষ্টা করতেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই দুষ্কৃতী এবং একের পর এক ছ’বার ছুরিকাঘাত করে অভিনেতার শরীরে।

রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে যান সইফ। শরীর থেকে রক্ত ঝরছে, তবু কোনওমতে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে এক সাক্ষাৎকারে সইফ বলেন, “ছুরিটা আমার বুকের খুব কাছে ছিল। তার উপর পিঠে গাঁথা ছুরি নিয়ে হাঁটছিলাম আমি। বিশ্বাসই হচ্ছিল না, এটা আমার সঙ্গেই ঘটছে। সত্যিই এটা ছিল এক বিশাল ধাক্কা।”

কিন্তু এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যেও তাঁর মনে তখন চলছিল এক অন্যরকম চিন্তাধারা। মৃত্যুর এত কাছে পৌঁছে তিনি হঠাৎ যেন নিজের জীবনের পুরোটা দেখতে পাচ্ছিলেন চোখের সামনে। সইফের কথায়, “হয়তো অ্যাড্রিনালিনের কারণেই এমনটা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, একজন মানুষ কতটা সৌভাগ্যবান হতে পারে! আমার জীবনটা সত্যিই রঙিন ছিল। আমি কত কিছু পেয়েছি — শুধু অর্থ নয়, অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা, অসাধারণ জায়গায় ভ্রমণ, যত ওয়াইন পান করেছি, যত স্মৃতি গড়েছি। স্ত্রী আর সন্তানদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো যেন একে একে ভেসে উঠছিল চোখের সামনে।”

এই ভয়াবহ ঘটনার পর শুধু সইফ নয়, গোটা বলিউডই শিউরে উঠেছিল। প্রিয় অভিনেতার প্রাণহানির আশঙ্কায় চিন্তায় ছিলেন তাঁর অনুরাগীরা। সৌভাগ্যবশত দ্রুত চিকিৎসার ফলে তিনি এখন সুস্থ আছেন, কিন্তু সেই রাতের স্মৃতি আজও তাঁকে ছেড়ে যায়নি।

সইফ জানান, ঘটনাটি তাঁকে জীবন সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। “আমরা কত সহজে জীবনকে ধরে নিই, যেন সব সময়ই থাকবে। কিন্তু মৃত্যুর এত কাছে এসে বুঝেছি, প্রতিটি মুহূর্ত কত মূল্যবান। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, প্রিয়জনদের ভালোবাসা পাওয়া — এগুলোই আসল সম্পদ।”

সেই রাতে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে সইফের চোখে এখন জীবন আরও মূল্যবান হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “আজ আমি আরও বেশি করে বুঝতে পারি, কতটা আশীর্বাদপ্রাপ্ত আমি। জীবন যতদিন আছে, ততদিন প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করতে চাই।”

এক ভয়ঙ্কর রাত, ছুরিকাঘাতের যন্ত্রণা, রক্তাক্ত শরীর — তবু সেই অন্ধকারের মধ্যে থেকেও আলো খুঁজে নিয়েছেন সইফ। আর তাঁর এই অভিজ্ঞতা আমাদেরও মনে করিয়ে দেয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই এক একটি আশীর্বাদ, যা আমরা প্রায়শই অবহেলা করে ফেলি।

পুজোর সময়ে কিউআর কোড স্ক্যানের আগে সতর্ক থাকুন: সাইবার প্রতারণা এড়ানোর টিপস

Read more

Local News