Monday, December 1, 2025

বাংলাদেশে আর স্বৈরাচার হবে না: রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতায় মুহাম্মদ ইউনূসের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা

Share

রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতায় মুহাম্মদ ইউনূসের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা

বাংলাদেশ কখনও স্বৈরশাসনের পথে ফিরে যাবে না। দেশের গণতন্ত্র আর কখনও সঙ্কটের মুখোমুখি হবে না—এই দাবি করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী সমাজকর্মী মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের ৮০তম সাধারণ সভায় ভাষণ দেন এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতি তুলে ধরেন।

ইউনূস বলেন, “স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। দলমত নির্বিশেষে, দেশের গণতন্ত্র ও প্রশাসনিক সংস্কারের কাজ একত্রে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “গত বছর এই সভায় আমি দাঁড়িয়েছিলাম সদ্য গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত একটি দেশের রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের শোনানোর জন্য। আজ আমি সেই রূপান্তরের পথে অগ্রগতির কথা জানাচ্ছি।”

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং সাম্যের জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে বলে মনে করিয়ে দেন ইউনূস। কিন্তু গত পাঁচ দশকে সেই অধিকার বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। জনগণকে বারবার সেই অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। ইউনূস বলেন, “গত বছরের জুলাইয়ে যুবসমাজের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার পরাস্ত করা হয়েছে। সেই আন্দোলনই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কখনও পিছপা হবে না।”

ইউনূস রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতার আগে বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলকেও লক্ষ্য করেন। তিনি ভারতের উদ্দেশ্যে বলেন, “বাংলাদেশের ছাত্ররা যা করেছে, তা ভারতের পছন্দ হয়নি। কারণ ওই আন্দোলনের ফলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থায় ভারত তাঁর নিজস্ব স্বার্থে হস্তক্ষেপ করছিল।

ইউনূসের বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতি বন্ধ করার চেষ্টা কেউ করতে পারবে না। দেশের যুবসমাজ, নাগরিক সমাজ এবং অন্তর্বর্তী সরকার একসঙ্গে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন, দেশের স্বার্থ ও জনগণের অধিকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, রাষ্ট্রপুঞ্জের এই বক্তৃতায় ইউনূসের বার্তা ছিল দৃঢ় ও অনুপ্রেরণামূলক—বাংলাদেশ কখনও পুনরায় স্বৈরাচারের শিকার হবে না এবং গণতন্ত্রের মিশন সবসময় অটুট থাকবে। তাঁর বক্তৃতা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার ও মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য দেশের যুব সমাজ ও প্রশাসন কতটা সংহতভাবে কাজ করছে।

এই বক্তৃতার মধ্য দিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র কোনও compromis-এর বিষয় নয়, এবং সেই আদর্শকে প্রতিষ্ঠায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ব্যালকনির উপর উড়ালপুল! নাগপুরের সেতু স্মরণ করাচ্ছে ভোপালের ৯০ ডিগ্রি রেলসেতুর ঘটনার কথা

Read more

Local News